পেট ফাঁপা বা হজমের সমস্যায় কখনো ভোগেননি, এমন কাউকে সম্ভবত খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিশেষ করে একটু ভারী খাবার খাওয়ার পর এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয় অনেকেরই।
আবার যাদের অনিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস, জাঙ্ক ফুড বা ফাস্ট ফুড বেশি খান, অনেক রাত করে খাবার খান, তাদের ক্ষেত্রেও পেট ফাঁপা কিংবা হজমের সমস্যা পরিচিত। তবে এ ধরনের সমস্যা সমাধানের উপায় রয়েছে আমাদের রান্নাঘরেই।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, পেট ফাঁপা কমানো এবং হজমশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া প্রতিকার-
বাটারমিল্ক
প্রাকৃতিকভাবে প্রোবায়োটিক প্রকৃতির হওয়ায় বাটারমিল্ক হজমের উন্নতিতে সাহায্য করে এবং পেটে গ্যাস জমা হতে বাধা দেয়। এটি পাকস্থলীকে প্রশমিত করে, অন্ত্রের গতি স্বাভাবিক করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। এক চিমটি ভাজা জিরা গুঁড়া, সামান্য লবণ মিশিয়ে খেলে তা অন্ত্রকে আরও শান্ত করতে পারে। এটি হালকা, আরামদায়ক এবং ভারী দুপুরের খাবার শেষে একটি আরামদায়ক পানীয় হতে পারে।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ রিসার্চ ইন আয়ুর্বেদ অ্যান্ড ফার্মেসির গবেষণা অনুসারে, বাটারমিল্ক খেলে তা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে। এটি আইবিএস (ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম) রোগীদের জন্যও কার্যকারিতা বজায় রেখেছে এবং দেখা গেছে যে, আইবিএস রোগীদের ক্ষেত্রে তাদের সমস্যাগুলো, বিশেষ করে পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা এবং অনিয়মিত মলত্যাগ কমাতে সাহায্য করেছে।
মৌরি
খাওয়ার পরে এক মুঠো মৌরি চিবিয়ে খেলে তা হতে পারে পেট ফাঁপা এবং গ্যাস প্রতিরোধের অন্যতম সহজ উপায়। মৌরিতে প্রাকৃতিক তেল থাকে যা পাচনতন্ত্রের পেশীকে শান্ত করে এবং গ্যাসের অনায়াসে উত্তরণ ঘটায়। অথবা মৌরি পানিতে সেদ্ধ করে চা হিসেবে খেতে পারেন। এটি সেদ্ধ করে ছেঁকে নিন এবং হজমের জন্য উষ্ণ গরম চা হিসেবে পান করুন। খাবারের পর এই ছোট্ট অভ্যাসটি আপনাকে অনেকটাই হালকা বোধ করতে সাহায্য করবে।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ অ্যাডভান্সেস ইন নার্সিং ম্যানেজমেন্ট উল্লেখ করেছে যে, মৌরি চা বদহজম, পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খুবই কার্যকর কারণ এই বীজে তেল থাকে। মৌরিতে এস্ট্রাগোল, ফেনকোন এবং অ্যানিথোল থাকে, যা উদ্ভিদের অ্যান্টিস্পাসমোডিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যে অবদান রাখে।
কালোজিরা
আমাদের বিভিন্ন রান্নায় কালোজিরা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং এতে উদ্বায়ী তেল থাকে যা হজমকে উদ্দীপিত করে এবং পেটে গ্যাস প্রতিরোধ করে। এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য কমপক্ষে ৫ মিনিটের জন্য এক চা চামচ কালোজিরা পানিতে ফুটিয়ে ছেঁকে সকালে খালি পেটে পান করতে পারেন। ফলস্বরূপ, এই প্রতিকারটি পিত্ত উৎপাদন বৃদ্ধি করে যা খাবার দ্রুত হজম করে, অন্ত্রে প্রদাহ কমায় এবং এই পানির নিয়মিত ব্যবহার প্রাকৃতিকভাবে সিস্টেমকে শুদ্ধ করে এবং অন্ত্রের ভারসাম্য উন্নত করে।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফার্মা অ্যান্ড বায়ো সায়েন্সেস তাদের গবেষণায় উল্লেখ করেছে যে, কালোজিরা, ফুটন্ত পানিতে ফুটিয়ে দিয়ে পান করলে, ৪ সপ্তাহ ব্যবহারের পরে পেট ফাঁপা এবং বমি সহ গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যাগুলো কার্যকরভাবে হ্রাস পায়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর