জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে একমত নয় জামায়াতে ইসলামীসহ আট দল। তারা নির্বাচনের আগেই গণভোট চেয়েছেন। একই সঙ্গে তিন উপদেষ্টার অপসারণও চান তারা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আট দলের এ অবস্থান তুলে ধরেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
তাহের বলেন, ১৬ নভেম্বর আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হবে। সেখান থেকে নতুন কর্মসূচি আসবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো—ভিন্ন ভিন্ন দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট ঘোষণা।
অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টাকে অপসারণ করতে হবে। প্রশাসনের রদবদলের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ও জবাবদিহির আওতায় থাকতে পারেন—এমন মনোভাবের লোকদের নিয়োগ করতে হবে।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, একটি দল শুরু থেকেই রাষ্ট্র সংস্কারের বিরোধিতা করেছে। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন না হয়ে একটি বিশেষ দলের স্বার্থ গুরুত্ব পেয়েছে।
এ ভাষণ গণভোটের ব্যাপারে জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে জটিলতায় ফেলে দিল।
তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের নানা সিদ্ধান্তে ৯০ শতাংশ দল একমত হলেও একটি দলকে গুরুত্ব দিতে প্রধান উপদেষ্টা ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে পাশ কেটে গেছেন।
তিনি বলেন, ছাত্রসংসদ নির্বাচনগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো একটি দলের বিরুদ্ধে যাওয়ায় গণভোট নিয়ে তারা আতঙ্কে রয়েছেন।
তাহের আরো বলেন, নির্বাচনের আগে গণভোট হলে দলটির চিন্তা-চেতনার বিপরীতে যাবে। সে আশঙ্কা থেকে বলা হচ্ছে, আগে গণভোট হলে জীবনেও মানবে না।
কিন্তু সরকার তাদের দাবির ওপর নতি স্বীকার করে একই দিনে গণভোট করার ঘোষণা দিয়েছে।
এতে সংস্কারের বিষয়টি গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে। কারণ, নির্বাচনের দিন নিজ দলের পক্ষে ভোট পাওয়ার জন্য সবাই মনোযোগী হবে। পরে গণভোটে ভোট কম পড়লে, যারা সংস্কার চাচ্ছে না, তারাই বলবেন—এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। আমরা মনে করি, এটা একটা ফাঁদ। বুঝে হোক আর না বুঝে হোক, সরকার সেই ফাঁদে পা দিয়েছে, মন্তব্য করেন তিনি।
তিনজন উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টাকে ভুল বুঝিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পথ রুদ্ধ করেছেন অভিযোগ তুলে তাহের বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করছেন তিনজন উপদেষ্টা। তাকে ভুল বুঝিয়ে একটি বিশেষ দলকে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
তিনি আরো বলেন, জনগণ গত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। কিন্তু আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কি না, তা নিয়ে আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি। সম্প্রতি প্রশাসনে যে রদবদল হচ্ছে সেখানেও একটি দলকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই৷
তাহের বলেন, আমরা আট দলসহ আরো কিছু দল চাই, ফেব্রুয়ারি মাসে রোজার আগে নির্বাচন সফল হোক। এর জন্য আমরা মাঠে কাজ করছি। কিন্তু যেই কারণে জনগণ ১৫ বছর ভোট থেকে বঞ্চিত হয়েছিল, আবার সেই অবস্থা তৈরি হয়েছে। আরেকটি পরিকল্পিত নির্বাচন হতে যাচ্ছে কি না, সেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নিরেপক্ষে নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। এ নিয়ে রাজনৈতিক দলে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তাহের।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর