মেহেরপুরে প্রেমিকের সাথে ঘুরতে গিয়ে এক কলেজছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ঘটনায় জড়িত তিন যুবকের মধ্যে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে সদর উপজেলার রাজাপুর এলাকায়।

আটক দুই ধর্ষক হলেন, রাজাপুর গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম এবং জুমাত আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলাম। এদের সহযোগী নজরুল ইসলামের ছেলে মিনারুল বর্তমানে পলাতক।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। রাতে ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রী নিজে বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, আটক দুই আসামিকে আজ শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বুধবার বিকালে মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তার প্রেমিক—মেহেরপুর সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্র—এর সাথে মোটরসাইকেলযোগে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে বের হন। সন্ধ্যার দিকে সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মাঠের রাস্তা দিয়ে আসার সময় তিন যুবক তাদের পথরোধ করে।

এসময় তারা প্রেমিক-প্রেমিকাকে নানা প্রশ্ন করতে থাকে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে প্রেমিকের গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের ইউপি সদস্য চঞ্চলের ভাটার পেছনে আমবাগানে নিয়ে যায়।

সেখানে তারা প্রেমিকের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে তাদের বিবস্ত্র করে ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে প্রেমিক তার প্রেমিকাকে তিন যুবকের কাছে রেখে টাকা আনার জন্য মেহেরপুর শহরে যান। টাকা নিয়ে ফিরে এসে তিনি দেখেন তার প্রেমিকা কান্নাকাটি করছে।

পরে প্রেমিকা জানান, তিন যুবক তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রেমিক তখন গ্রামবাসী ও বন্ধুদের খবর দেন। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়।

পরবর্তীতে ধর্ষণের শিকার ছাত্রী নিজে বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিন যুবককে আসামি করা হয়।

সদর থানার ওসি (অপারেশন) জাহাঙ্গীর সেলিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলায় আমি তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছি। ধর্ষণের শিকার ছাত্রী নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ঘটনায় জড়িত দুইজনকে আটক করা হয়েছে। পলাতক আসামিকে আটকের জন্য অভিযান চলছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আটক দুই আসামিকে আজ দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।