বান্দরবানের লামার ফাইতং পাগলীর আগা এলাকায় ইটভাটার অভিযানে যাওয়ার পথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ইটভাটা শ্রমিক ও স্থানীয় জনতার মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় চকরিয়া হতে মানিকপুর সড়কের পাহাড়তলী এলাকায় এঘটনা ঘটে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় হতে গঠিত স্পেশাল টিম এই অভিযানে পরিচালনা করছে। স্পেশাল অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজুয়ান উল ইসলাম। অভিযানে বান্দরবান জেলা প্রশাসন, লামা উপজেলা প্রশাসন, বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তর অফিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিস সহায়তা করছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় স্পেশাল টিম লামার ফাইতং ইউনিয়নের পাগলীর আগা এলাকায় ইটভাটায় অভিযান করতে রওনা দেয়। অভিযান টিম চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের পাহাড়তলী এলাকায় পৌঁছালে ইটভাটার শ্রমিক, স্থানীয় নারী-পুরুষ সড়কে ইটের স্তুপ দিয়ে ট্রাক, ডাম্পার ও মিনি পিকআপ রেখে স্পেশাল টিমকে বাঁধা দেয় ও গতিরোধ করে। তার আগেও গত ১৬ নভেম্বর রবিবার মানিকপুর এলাকায় স্পেশাল টিমকে বাঁধা দেয়া হয়। প্রশাসন অনেক অনুরোধ করলেও শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে যায়নি। দুপুর ১২টার দিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিরোধকারী লোকজনকে সরিয়ে দিতে গেলে হট্টগোল লেগে যায়।
এসময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় বিজিবি ও পুলিশের ৭ সদস্য আহত হয়েছে। শ্রমিকদের অংশে নারী-পুরুষ-শিশু সহ ৫০ জনের অধিক লোকজন আহত হয়েছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, বিজিবি ও ট্রাক সহ মোট ৬টি গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ইটভাটার ৫ শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছেন। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে স্পেশাল টিম ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ফিরে যায়। এই নিয়ে গত ৪দিন ইটভাটায় অভিযানকালে বাঁধার মুখে পড়ে প্রশাসন।
অভিযানে আলীকদম সেনা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর হাফিজ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) লামা রুবায়েত আহমেদ, লামা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাসুম সর্দার, চকরিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ তৌহিদুল আনোয়ার, লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস ও পরিবেশ অধিদপ্তর অংশ নেয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকরা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলা করে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন শ্রঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি ভাংচুর করেছে। অনেকে আহত হয়েছে। এই ঘটনা রাষ্ট্রীয় কাজে কারণে চকরিয়া থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলায় ৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৫০০/৬০০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না সত্ত্বে শ্রমিকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে তাদের অংশে ৮ জন নারী শিশু সহ মোট ৫০ জনের অধিক লোকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ জনের অধিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। অনেককে আটক করা হয়েছে। নারী ও শিশু গায়ে হাত তোলা জনতা ক্ষেপে যায়। মিনিট্রাক ও পিকআপ শ্রমিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের রুটি রোজগারের জায়গা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। ইটভাটা বন্ধ হলে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর