মানিকগঞ্জে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের (৬০) ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে তৌহিদী জনতা। একই সময়ে শহরে বাউল শিল্পীর অনুসারীরা তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জড়ো হলে তৌহিদী জনতার ধাওয়ায় তিন বাউল শিল্পী গুরুতর আহত হন। পরে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় শহরজুড়ে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সকাল সাড়ে দশটায় মানিকগঞ্জ স্টেডিয়াম মোড় এলাকায় এই সংঘাতের ঘটনা ঘটে।
এর আগে সকাল নয়টায় তৌহিদী জনতা মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে সহস্রাধিক ওলামায়ে কেরামের একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ করে। শহরের স্টেডিয়াম মোড় এলাকায় বাউল অনুসারীরা অবস্থানকালে তৌহিদী জনতার মিছিল থেকে শতাধিক জনতা বাউল শিল্পীদের উদ্দেশ্যে ধাওয়া দেয়। এ সময় তাঁরা বিভিন্ন দিকে ছোটাছুটি করে এবং জীবন বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এই ধাওয়ায় বিক্ষোভকারীদের হাতে তিন বাউল শিল্পী গুরুতর রক্তাক্ত আহত হন।
আহতরা হলেন– শিবালয় উপজেলার সাঁকরাইল এলাকার বাউল শিল্পী আব্দুল আলিম (২৫), সিঙ্গাইর উপজেলার তালেপুর এলাকার বাউল শিল্পী আরিফুল ইসলাম (২৯), হরিরামপুর উপজেলার কামারঘোনা এলাকার বাউল শিল্পী জহিরুল ইসলাম (২৭) এবং সদর উপজেলার বরঙ্গখোলা এলাকার বিক্ষোভকারী আব্দুল আলিম (২৭)।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবেই শহরে প্রবেশ করছিল, এ সময় হঠাৎ করেই মিছিলের ভেতর থেকে কিছু লোকজন বাউলদের উদ্দেশ্য করে ধাওয়া দেয়। মুহূর্তেই পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এসময় তিন বাউল শিল্পী গুরুতর ও এক বিক্ষোভকারী কিছুটা আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় কেউ অভিযোগ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসক বরাবর বাউল শিল্পী আবুল সরকারের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে তৌহিদী জনতা।
উল্লেখ্য, ১ নভেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার জাবরা এলাকায় গানের আসরে আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তি করেন বাংলাদেশ বাউল সমিতির সভাপতি বাউল শিল্পী আবুল সরকার। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ধর্ম নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) তাঁকে আটক করে মানিকগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর মুফতি আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে ঘিওর থানায় একটি ধর্ম অবমাননার মামলা করেন। এই মামলার আজ (২৩ নভেম্বর) আদালতে জামিন শুনানি।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর