রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের পাতুরিয়া বালু মহাল থেকে খোলা ট্রাকে করে বহন করা হচ্ছে বালু। বালু বোঝাই এই গাড়িগুলো ব্যবহার করছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ কাঁচা পাকা সড়ক ও রাজবাড়ী কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক। এতে বালু-ধূলিকণা বাতাসে মিশে বায়ু দূষণ করছে। সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীদের দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে যেন উদাসীন।
এলাকাবাসী জানান, ডিসি অফিস কর্তৃক ইতারা কৃত পাতুরিয়া বালু মহাল ও আশপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন বালু তুলে ট্রাকে করে বিভিন্ন স্থানে বহন করা হচ্ছে। এই বালু বিভিন্ন বসতবাড়ির ভিটা উঁচুকরণ, গর্ত ভরাটসহ ইটভাটার কাজে নেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাকে বালু-মাটি বহনের ক্ষেত্রে কাপড় বা প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে বহন করার কথা। কিন্তু বালু ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। ফলে চলন্ত ট্রাক থেকে বালু-ধূলিকণা উড়ে সড়কে চলাচলকারী মানুষের চোখমুখে লাগছে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন তাঁরা। এ ছাড়া ছোট যানবাহন চালকদের এ কারণে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
এলাকাবাসী আরো জানান, প্রতিবছর পাতুরিয়া বালু মহাল ইজারা নিয়ে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ব্যবসায়ীরা। এই ড্রেজারে বালু উত্তোলনের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে গড়াই নদী পাড়ের বসতবাড়ি ও ফসলী জমি, ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। আতঙ্কে রয়েছেন তারা যে কোন মুহূর্তে ভেঙ্গে যেতে পারে তাদের বসতভিটা। এছাড়াও খোলা গাড়িতে বালি বহন করাতে সেটা রাস্তায় পড়ে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে পাকা রাস্তা রূপ নিয়েছে কাঁচা রাস্তায়। ৫০০ ফিটের ড্রাম ট্রাক ব্যবহার করে বালু নেওয়ার ফলে রাস্তা দেবে ভেঙ্গে যাচ্ছে।
প্রতিদিন পাতুরিয়া বালু মহাল থেকে বালু বোঝাই গাড়িগুলো কালুখালী, পাংশা ও বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন সড়কে যাচ্ছে। এই গাড়িগুলো যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করে তার সবকটিই রাস্তার বেহাল দশা বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মৃগী বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীরা ওই বালু-ধূলিকণার জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। পাতুরিয়া বালু মহাল এলাকার আশপাশ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন খোলা ট্রাকে করে বালু ভরাট করে দূরদূরান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। গড়াই নদী এলাকার কয়েক স্থানে এভাবে বালুর ব্যবসা করছেন। প্রতিদিন এসব রাস্তা দিয়ে চলাচল রত স্কুল শিক্ষার্থী ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ এ ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, বালু ব্যবসায়ীরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলতে সাহস পান না। আবার যানবাহনের চালক বা সহকারী এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো গালিগালাজের শিকার হতে হয়।
পাতুরিয়া বালি মহাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একতা ট্রেডার্সের মালিক প্রোঃ মোঃ জাকির মোল্লাকে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে কালুখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাম সাদাত মাহমুদউল্লাহ এ ব্যাপারে জানান, কভার ছাড়া বালু পরিবহনের কোন সুযোগ নেই বায়ু দূষণ একটি আইন আছে সেই আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তবে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর