ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জাতীয় প্রাণীসম্পদ সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী মেলায় এবার দেখা গেল না আগের বছরের জৌলুস। সরকারি বরাদ্দ থাকলেও নাস্তার জন্য ওষুধ কোম্পানির সহযোগিতা নেওয়ার অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অংশগ্রহণকারীরা।
বুধবার (২৬ নভেম্বর/২৫) সকালে উপজেলা প্রশাসন, প্রাণীসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে হাসপাতাল চত্বরে এই মেলার উদ্বোধন করা হয়। দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, আগের বছরের তুলনায় মেলায় দর্শনার্থীর উপস্থিতি অনেক কম। যেখানে অন্যান্য বছর স্টলগুলোতে উপচেপড়া ভিড় দেখা যেত, এবার সেখানে কর্মকর্তাদের অলস বসে থাকতে দেখা গেছে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর জানায়, এবছর মেলা আয়োজনের জন্য ২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং ৩২টি স্টল নির্মাণ করা হয়। তবে এর মধ্যে ৪–৫টি স্টল পুরোপুরি খালি ছিল।
অনেক স্টলেই নামেমাত্র পশুপাখি রাখা হলেও খামারিদের দেখা পাওয়া যায়নি। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে, সরকারি বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও অংশগ্রহণকারীদের নাস্তার জন্য প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়েছেন। আরও অভিযোগ রয়েছে—অফিস সময় ফেলে তিনি নাকি ব্যক্তিগতভাবে ২ থেকে ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা গণমাধ্যমকে জানান, কর্মকর্তারা তাদের কোম্পানির ওষুধ লেখেন বলেই তারা সহযোগিতা করেছেন। তবে সরকারি বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের সহায়তা নেওয়া উচিত হয়নি বলেও তারা মন্তব্য করেন। মগটুলা ইউনিয়নের নাউড়ী গ্রামের হাঁস খামারি আলাল উদ্দিন বলেন, “গত ৩–৪ বছর ধরে মেলায় অংশ নিচ্ছি। কিন্তু এবছর মেলা আগের মতো জমেনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে খামারিরা লোকসানে আছে, তাই অংশগ্রহণ কমেছে।” টাইগার মুরগির খামারি শাহাত হোসেন সিফাত বলেন, “গত তিন বছর ধরে অংশ নিচ্ছি। এবছর মেলা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আগের মতো উত্তেজনা-উদ্দীপনা ছিল না।” অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম অভিযোগ অস্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেন,“আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ত্রুটি ছিল না। শীতকালীন সময় হওয়ায় উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে কোনো টাকা বা নাস্তার সহযোগিতা নেওয়া হয়নি। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।”
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর