বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড সিবগাতুল্লাহ সিবগা বলেছেন, “বাংলাদেশে মানুষের চাওয়া-পাওয়া খুবই অল্প। কিন্তু অন্যান্য দলের নেতা-কর্মীরা চাঁদাবাজির একটি সিস্টেম তৈরি করে রেখেছে। কৃষকের পণ্য থেকে শুরু করে মিল-ফ্যাক্টরি—এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তারা চাঁদাবাজি করে না। এই চাঁদাবাজির সিস্টেমে আমাদের জীবনের বরকত নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা বিশ্বাস করি, যদি সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়, তবে হারিয়ে যাওয়া সেই বরকত আবার ফিরে আসবে।” শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে গাজীপুরের কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘যুব সমাবেশ ২০২৫’-এ প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সিবগাতুল্লাহ সিবগা আরও বলেন, “অন্যের সম্পদ ও অধিকার ভক্ষণ করা আগুন ভক্ষণ করার চেয়েও ভয়ঙ্কর। স্বাধীনতার পর অসংখ্যবার ভোট দিয়েছি, ভেবেছিলাম জীবন পরিবর্তন হবে কিন্তু হয়নি। যারা নিজ দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না, তারা জনগণের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না। সময় বদলেছে, আমরা হজরত ওমরের মতো যোগ্য নেতাকে ভোট দিবো, ইনশাআল্লাহ।”

কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও আমীর মো. আফতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

সমাবেশে কালীগঞ্জের উন্নয়নের বিস্তারিত রূপকল্প পেশ করেন গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও গাজীপুর মহানগরের নায়েবে আমীর মো. খায়রুল হাসান। তিনি রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে এলাকার উন্নয়নে সৎ ও দক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ‘সেক্টর ভিত্তিক উন্নয়ন কমিটি’ গঠনের ঘোষণা দেন।

খায়রুল হাসান তাঁর রূপকল্পে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোগত উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “সামজিক প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও স্কুল-কলেজের কমিটিতে কোনো দলীয়করণ করা হবে না বরং যোগ্যদের দায়িত্ব দেওয়া হবে।”

তাঁর পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে—টঙ্গী-ঘোড়াশাল- সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক কে চার লেনে উন্নীতকরণ, আধুনিক হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সহায়তা কর্মসূচি। এছাড়া তিনি মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত সমাজ এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য একটি নিরাপদ ‘সেফটি জোন’ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। কৃষি ও শিল্প খাতের আধুনিকায়ন এবং যুবকদের কর্মসংস্থানের বিষয়টিও তাঁর রূপকল্পে প্রাধান্য পায়।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গাজীপুর মহানগর আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন, গাজীপুর জেলা আমীর ও গাজীপুর-৩ আসনের প্রার্থী ড. মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, শহীদ আলী আহসান মুজাহিদের ছেলে গবেষক আলী আহমাদ মাবরুর, গাজীপুর-৪ আসনের প্রার্থী মো. সালাহ উদ্দিন আইউবী, গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামসুল হক ভূঁইয়া প্রমুখ।

সাজু/নিএ