সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে চলমান কর্মবিরতি ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণার মধ্যেও ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ১৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুষ্ঠুভাবে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কঠোর তদারকিতে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই পরীক্ষা গ্রহণ শুরু হয়।
সকালে উচাখিলা ইউনিয়নের কাজীর বলসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা রহমান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাকলাইন আহমেদ। পরীক্ষা শুরুর আগে ইউএনও সানজিদা রহমান উচাখিলা ইউনিয়নের আরও কয়েকটি বিদ্যালয়—চর-আলগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলাদিয়ার আলগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মরিচারচর নামাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মরিচারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের নির্ভয়ে ও উৎসাহের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। এসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আহমেদ।
উপজেলা প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্র জানায়, ঘোষিত কর্মবিরতি ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি উপেক্ষা করে উপজেলার ১৪০টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অংশ নেন—ইউনিয়ন পরিষদের সচিব, ভূমি অফিসের নায়েব, প্রধান শিক্ষকবৃন্দ, গ্রাম পুলিশ ও আনসার সদস্যরা, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক, অভিভাবক এবং প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর।
শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে কাজীর বলসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার, মেহেদী হাসান, শামীমা আক্তার খুশী ও বায়জিদ রহমান জানান, পরীক্ষা দিতে পেরে তারা অত্যন্ত আনন্দিত। বড় ম্যাডাম (ইউএনও) এসে সরাসরি পরীক্ষা নেওয়ায় তারা আরও বেশি উৎসাহ পেয়েছে। অভিভাবক বাদল মিয়া ও নাজমুল আলম বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে ফেলে দাবি আদায়ের কর্মসূচি গ্রহণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। তারা এ ধরনের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানান।
প্রধান শিক্ষক সাকলাইন আহমেদ বলেন, ইউএনও ও শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা উৎসাহিত হয়েছে। পুরো পরীক্ষার পরিবেশই ছিল শান্তিপূর্ণ।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আহমদ বলেন, কঠোর প্রশাসনিক নজরদারির কারণে কোনো বিদ্যালয়েই পরীক্ষা স্থগিত হয়নি।
ইউএনও সানজিদা রহমান বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা না থাকায় যেকোনো পরিস্থিতিতেই বার্ষিক পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে। সহকারী শিক্ষকরা অংশ না নিলে প্রধান শিক্ষক, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় শিক্ষিতদের সহযোগিতায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।”
তিনি আরও জানান, কয়েকটি বিদ্যালয়ে তিনি সরাসরি উপস্থিত থেকে পরীক্ষা নিয়েছেন এবং শিক্ষার্থীরা এতে খুব আনন্দ পেয়েছে।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর