রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের পাংশা বাবুপাড়া গ্রামের হৃদয় হোসেন নামের এক যুবক চার মাস আগে খাগড়াছড়ির এক সন্তানের জননীকে প্রেম করে বিয়ে করেন। এরপর থেকেই খাগড়াছড়ির ওই স্ত্রীর সাবেক স্বামী রুবেল বর্তমান স্বামী হৃদয় ও তার পরিবারকে নানাভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ।
এ ঘটনার পর রুবেল আইনি প্রক্রিয়ায় ওই গৃহবধূকে পুলিশের সহায়তায় নিয়ে গেলেও ১০-১২ দিনের মাথায় হৃদয়ের প্রেমের টানে তিনি পুনরায় বাবুপাড়ায় ফিরে আসেন। তখন থেকেই রুবেল তাদেরকে হত্যাসহ নানা হুমকি দিয়ে আসছিলেন। হৃদয়ের পিতা অনিল মণ্ডল জানান, রুবেল স্থানীয় একাধিক দুষ্কৃতকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে হয়রানি ও হত্যার পরিকল্পনা করছেন।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে বহিরাগতরা হৃদয়ের বাড়িতে প্রবেশ করে ঘরের বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে হৃদয় হোসেনকে ডাকতে থাকে। হৃদয় দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে মুখোশ পরিহিত ৩-৫ জন তাকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে। পরে চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ সময় বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা ৭ লিটার পেট্রল এবং একটি ধারালো ছুরি ফেলে পালিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে হৃদয়ের পরিবার। হৃদয়ের শরীরে ৫০-এর অধিক সেলাই দেওয়া হয়েছে। আহত হৃদয়কে তাৎক্ষণিক পাংশা সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে হৃদয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হৃদয় হোসেনের পিতা মো. অনিল মণ্ডল শনিবার নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলে প্রেম করে খাগড়াছড়ির এক মেয়েকে বিয়ে করেছে। তারা ওই মেয়েকে পুলিশের সহযোগিতায় নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সে পুনরায় তাদের বাড়িতে ফিরে এলে তারা পুত্রবধূকে মেনে নেন। এরপর থেকেই পুত্রবধূর আগের স্বামী রুবেল নানাভাবে তাদের পরিবারকে ধ্বংস করার লক্ষ্য নিয়ে পাংশা ও আশপাশের কিছু সন্ত্রাসীকে টাকা দিয়ে ভাড়া করে ক্ষতি সাধনে লিপ্ত।
শুক্রবারের রাতের ঘটনায় তার ধারণা, ওই রুবেলসহ স্থানীয় ৪-৫ জন ছিল। তারা তাদের প্রাণে মেরে ফেলতে চেষ্টা করছে। ৭ লিটার পেট্রল নিয়ে এসেছিল তারা। সুযোগ পেলে তাদের জ্বালিয়ে নিশ্চিহ্ন করে ফেলত। তাদের প্রতিটি ঘরে তারা তালা লাগিয়ে রেখেছিল যাতে তারা বের হতে না পারেন।
তিনি বলেন, ছেলের চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর ছিলেন। আজ এসেছেন। থানাকে জানানো হয়েছে, তিনি মামলা করবেন। এ ঘটনার সঠিক বিচার কামনা করছেন। আজ তার ছেলের সঙ্গে তাদের সপরিবারে হত্যা হতে চলেছিল।
এ ব্যাপারে পাংশা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুল গনি বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাননি। তবে শুনছেন। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর