ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির ওপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তবে এই ঘটনার রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষণের আড়ালে এক অবুঝ শিশুর নীরব আর্তনাদ যেন হারিয়ে যাচ্ছে- যে শিশু হয়তো এখনও বুঝতেই পারেনি তার প্রিয় বাবা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা বাবার জন্য শিশুটির কোনো ভাষা নেই, নেই প্রতিবাদের কোনো স্লোগান। তার অবুঝ মনে যেন শুধু এটুকুই চাওয়া- বাবা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরুক, স্নেহ-মমতায় আগলে রাখুক- এই আকুতিই যেন আজ পুরো সমাজের সামনে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একজন নাগরিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, যদি তার বাবা মারা যান- তাহলে তার অবুঝ সন্তানটি জানতেই পারবে না তার ‘বাবা’ কী ছিলেন? তার বাবা দেশের জন্য সংগ্রাম করেছিললেন, বুক চিতিয়ে ছিলেন দেশের জন্য অগ্রভাগে- কিছুই হয়তো অবুঝ শিশুর জানা হবে না।
তিনি আরও লেখেন, “আমি রাজনীতি বুঝি না। আমি শুধু মানুষের হয়ে, বাংলাদেশের হয়ে কথা বলছি। যেখানে প্রকাশ্যে একজন মানুষকে গুলি করে ফেলা যায়- সেখানে আমরা কেউই নিরাপদ নই।”
এই আবেগঘন লেখাটি মুহূর্তেই বহু মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে- আর কত প্রাণ গেলে বুঝব, সুস্থ ও নিরাপদ দেশে বাঁচার অধিকার রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটি একটি মৌলিক মানবিক অধিকার?
হাদির ওপর হামলা কেবল একজন রাজনীতিক বা একজন ব্যক্তির ওপর আঘাত নয়- এটি একটি পরিবারের স্বপ্ন, একটি শিশুর ভবিষ্যৎ এবং পুরো সমাজের নিরাপত্তাবোধের ওপর সরাসরি আঘাত। যে দেশে একজন মানুষকে প্রকাশ্যে গুলি করা যায়, সেখানে আতঙ্কের ছায়া শুধু একজনের নয়—সবার।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও উচ্চারিত হচ্ছে এক গভীর প্রশ্ন- আমরা কি সত্যিই একটি সুস্থ, নিরাপদ ও মানবিক বাংলাদেশ পাবো, নাকি সেটি শুধু স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে?
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর