আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
এর আগে এ সংক্রান্ত তার করা রিট আবেদন হাইকোর্টে খারিজ হওয়ায় আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) তিনি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এ আবেদন করেন।
মান্নার পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল কাইয়ুম জানান, রোববারই বিচারপতি মো. রেজাউল হক–এর চেম্বার আদালতে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
এর আগে গত বুধবার বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি মো. মনজুর আলম–এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মাহমুদুর রহমান মান্নার রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন। ওই আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান, হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের ফলে আসন্ন নির্বাচনে মান্নার অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে না।
হাইকোর্টে মান্নার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন আদালত নাকচ করেছেন, যার ফলে নির্বাচনী আইনি প্রক্রিয়ায় মাহমুদুর রহমান মান্না বাধার মুখে পড়েছেন। অন্যদিকে, মান্নার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া তখনই জানান, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১০ ডিসেম্বর মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান ‘আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেড’–এর কাছে পাওনা ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ের লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা ‘কল ব্যাক নোটিশ’ জারি করে। মান্না ও তার দুই অংশীদারের ঠিকানায় পাঠানো নোটিশে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধ না করায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
উল্লেখ্য, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডে মাহমুদুর রহমান মান্নার ৫০ শতাংশ এবং তার দুই অংশীদার এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরী ও ইসমত আরা লাইজুর যৌথভাবে ৫০ শতাংশ অংশীদারত্ব রয়েছে।
ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হলেও নিয়মিত মুনাফা বা জরিমানা পরিশোধ করা হয়নি। ফলে সময়ের সঙ্গে বকেয়ার পরিমাণ বেড়ে বর্তমানে ৩৮ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকের বগুড়া বড়গোলা শাখার প্রধান তৌহিদ রেজা জানান, প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও চুক্তি অনুযায়ী পাওনা পরিশোধে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর