
বরাবরের মতো বান্দরবানে এবারো এইচএসসি-তে ভালো রেজাল্ট করেছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ। ৪৯ জন পরীক্ষার্থীর শতভাগ পাশসহ ৩০ জন এ প্লাস পেয়ে বান্দরবান জেলায় ১ম হয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এবার বান্দরবানে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ১৪টি কলেজ। এর মধ্যে একমাত্র শতভাগ পাশ এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক জিপিএ-৫ পেয়েছে কোয়ান্টাম কসমো কলেজের শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম বোর্ডে ২৭৯টি কলেজের মধ্যে শতভাগ পাশ করে ১০টি কলেজ, যার মধ্যে কোয়ান্টাম কসমো কলেজের অবস্থান ৭ম।
এই সফলতায় অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে কোয়ান্টাম শিক্ষাসেবা কার্যক্রমের ইনচার্জ ছালেহ আহমেদ বলেন, ছাত্রদের ভালো রেজাল্ট হয়েছে তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টা, কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষক ও কর্মীদের আন্তরিক সেবাদানের জন্যে। তারা যেন ভবিষ্যতে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় এবং স্কুলে শেখানো ধ্যান ও শুদ্ধাচারের শিক্ষা আজীবন চর্চা করতে পারে এটাই আমরা প্রার্থনাই করি। কোয়ান্টাম কসমো কলেজের ৩০ জন জিপিএ-৫ এরমধ্যে ৭ জন সকল বিষয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে।
চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় এবছর জেলা বান্দরবানের গড় পাসের হার ছিল ৬৭ দশমিক ৩৪। গতবার এই হার ছিল ৮১ দশমিক ২০ শতাংশ। এ বছর পাসের হার কমেছে ১১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এদিকে বিজ্ঞান বিভাগে ১৮ জন, ব্যবসায় ১০জন ও মানবিকের ২জন সহ মোট ৩০জন জিপিএ-৫ পেয়ে জেলার প্রথমার্ধের এগিয়ে রয়েছে লামা কোয়ান্টাম কসমো কলেজ। বিজ্ঞান বিভাগে ২৪ জন ও মানবিক বিভাগে ৪জন সহ মোট ২৮ জনের জিপিএ-৫ পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ।
রোববার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ওয়েবসাইট ও নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা যায়। জেলা শিক্ষা অফিসার দেওয়া তথ্য মতে, বান্দরবানের চট্টগ্রাম বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেলেন ৪ হাজার ৪২ জন শিক্ষার্থীর। তার মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯০ জন। ২০২২ সালে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১১৭ জন। সে হিসেবে এ বছর কমে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯০ জন।
অপরদিকে বিজ্ঞান বিভাগে ৪৬৪ জন, মানবিক বিভাগে ১৫৮৫ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৬৭৩ জন শিক্ষার্থী যার পাশের হার সংখ্যা ৬৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত বছর পাশের সংখ্যা ছিল ৭৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এবছরে পাশের হার কমেছে ১১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
বান্দরবান জেলায় সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে কলেজ আছে ১৭টি। এর মধ্যে বান্দরবান সদরে ৪টি, লামায় ৫টি, নাইক্ষ্যংছড়িতে ২টি, রুমায় ১টি, থানচিতে ১টি এবং রোয়াংছড়িতে ১টি কলেজ আছে। বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় কোনো কলেজ নেই।
বান্দরবান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসেইনী জানান, গতবছরে আংশিক সিলেবাস ছিল, এই বছর সম্পূর্ণ সিলেবাসে পাঠদান করতে হয়েছে। তাই গতবছরে তুলনায় এবারে পাশে হার কিছুটা কমেছে। তাছাড়া অন্যান্য জেলায় যে সুযোগ- সুবিধা পেয়েছে, সে হিসেবে জেলাটি কিছুটা বঞ্চিত ছিল। তাছাড়া মূল কারণ হচ্ছে অনেকে বাড়িতে বিদ্যুতের লাইন নাই এবং বিভিন্ন স্থানে ইন্টারনেট অত্যান্ত দুর্বল। সেক্ষেত্রে ইন্টারনেট মাধ্যমে লেখাপড়া থেকে পিছিয়ে রয়েছে শিক্ষার্থীরা।
তিনি আরও জানান, প্রতিবারে লামা কোয়ান্টাম স্কুল এন্ড কলেজ ও বান্দরবানে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের রেজাল্ট ভালো হওয়ার কারণ হচ্ছে, অভিভাবক থেকে শুরু করে তাদের গাইডলাইন ভালো। আগামীতে আরো কিভাবে ভালো ফলাফল করা যায়, ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে কোন কলেজে কিভাবে পাঠদান করলে রেজাল্ট ভালো হবে, সেই মোতবেক নির্দেশনা দেবো বলে আশ্বাস করেন এ কর্মকর্তা।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর