
৪৬তম বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁস, পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার পরেও সংস্কার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হওয়ায় পিএসসি সংস্কার দাবিতে আবার বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে মিছিল শুরু হবে, পাশাপাশি দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতেও কর্মসূচি পালনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে পিএসসি সংস্কার আন্দোলন।
গত ১৭ এপ্রিল ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করে আন্দোলনকারীদের অনশন ভাঙিয়েছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। একই দিন আট দফা দাবির আলোকে একটি সংস্কার কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়, যার নেতৃত্বে থাকবেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসবে বলে জানানো হয়। একই সঙ্গে দ্বিতীয় একটি পিএসসি গঠনের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। আট দফা বাস্তবায়নে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন আন্দোলনকারীরা।
সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, পরীক্ষার তারিখ স্থগিত ও সংস্কারের আশ্বাস দেওয়ার পরও বাস্তব কোনো অগ্রগতি হয়নি।
বিন ইয়ামিন মোল্লা জানান, লিখিত ও প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পূর্ণ নম্বর প্রকাশ না করায় চাকরিপ্রার্থীরা বাদ পড়ার কারণ জানার সুযোগ পাচ্ছেন না। একই সঙ্গে ‘প্রাক–যাচাই’-এর নামে রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে, যা স্বচ্ছতার পরিপন্থী। এতে রেফারেন্সবিহীন মেধাবীরা প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
আরও জানানো হয়, প্রতি বিসিএস পরীক্ষার জন্য এক বছরের মধ্যে শেষ করার সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি, পরীক্ষার রুটিন কমপক্ষে দুই মাস আগে প্রকাশ এবং ফলাফলের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। গেজেট আটকে রাখার ক্ষেত্রে স্পষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোনো পদক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয় এবং এ বিষয়ে আপিলের সুযোগ থাকতে হবে।
বিন ইয়ামিন মোল্লা আরও বলেন, ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত না হলে এবং লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সূচি না দিলে পরীক্ষার গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। জুনের মধ্যে ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল এবং জুলাইয়ে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা আয়োজনের দাবিও জানানো হয়।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৪৫তম বিসিএসে মৌখিক নম্বর ১০০-এ উন্নীত করা, লিখিত ফলাফল জুনে প্রকাশ, ভাইভার আগে ক্যাডার পুনর্বাছাইয়ের সুযোগ এবং পিএসসির সদস্যসংখ্যা অস্থায়ীভাবে বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। লিখিত খাতার মূল্যায়ন পদ্ধতি স্বচ্ছ ও নিরাপদ করতে কমিশনের উপস্থিতিতে খাতা দেখার ব্যবস্থার কথাও বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসসংক্রান্ত রিট হাইকোর্টে খারিজ হলেও প্রকৃত অপরাধীদের বিচার হয়নি, যার দায়িত্ব সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে। ফলে আন্দোলনকারীরা আশঙ্কা করছেন, আবারও পরীক্ষা নিলে সেটি পিএসসির নিয়ন্ত্রণে থাকা একচেটিয়া সিন্ডিকেটের ইঙ্গিত বহন করবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর