
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ ট্যাক্স ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএলএ) ও ঢাকা ট্যাকসেস বার অ্যাসোসিয়েশন (ডিটিবিএ)। আজ ৮ মে (বৃহস্পতিবার) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলার আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিলুপ্তি নয়, সংস্কার চাই’ শীর্ষক দাবি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রমিজ উদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মতিন, এএইচএম মাহাবুবুস সালেকিন, মো. আবু নাছের মজুমদার এবং এ টি এম রাশেদ বাবুসহ বিটিএলএ ও ডিটিবিএ-এর অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা জানান, এনবিআর একটি শতবর্ষী প্রতিষ্ঠান, যার শিকড় ভারতীয় উপমহাদেশে ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত 'সেন্ট্রাল বোর্ড অব রেভিনিউ' পর্যন্ত বিস্তৃত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে প্রণীত প্রেসিডেন্টের আদেশ অনুযায়ী এনবিআর প্রতিষ্ঠিত হয়।
তারা অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক একটি প্রণীত খসড়া অধ্যাদেশের মাধ্যমে এনবিআর বিলুপ্তির প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে দেশের রাজস্ব ব্যবস্থায় মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে। বিশেষভাবে আলোচিত হয় অধ্যাদেশের ধারা ১৩(১), যেখানে বলা হয়েছে, এটি কার্যকর হলে ১৯৭২ সালের প্রজ্ঞাপন বাতিল হবে এবং এনবিআর বিলুপ্ত হবে।
বক্তারা বলেন, এনবিআর বিলুপ্তির পরিবর্তে এর কাঠামোগত ও নীতিগত সংস্কার জরুরি। রাজস্ব নীতি বিভাগকে শক্তিশালী করা, আধুনিকায়ন ও অটোমেশন প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়ন, এবং পেশাদারিত্ব ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাই সময়োপযোগী পদক্ষেপ হবে।
এ সময় বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের রাজস্ব ব্যবস্থার প্রধান অংশীজন কর আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই এ খসড়া অধ্যাদেশ প্রস্তুত করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পরিপন্থী। তারা দাবি জানান, অবিলম্বে এই খসড়া অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে মাত্র ১৬৬ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ দিয়ে যাত্রা শুরু করা এনবিআর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩,৬২,৭৯৮ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণে সক্ষম হয়েছে, যা বার্ষিক গড় ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে। এনবিআর একটি সফল ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান—এ কথা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, এটি কোনোভাবেই বিলুপ্তির যোগ্য নয়।
বক্তারা বলেন, এনবিআর বিলুপ্তির খসড়া অধ্যাদেশ দেশের রাজস্ব ব্যবস্থা, অর্থনীতি ও প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। এটি অবিলম্বে বাতিল করে স্বচ্ছ ও কার্যকর সংস্কার প্রক্রিয়া গ্রহণের মাধ্যমে এনবিআরকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তারা।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর