• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৭ সেকেন্ড পূর্বে
মো. আশিকুজ্জামান
বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২১ মে, ২০২৫, ০৭:২৪ বিকাল

রাজনৈতিক কারণে বঞ্চিত, শিক্ষক নিয়োগে সাহসী পদক্ষেপ বাকৃবি প্রশাসনের

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগে চলে আসা স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক প্রভাব এবং বৈষম্যের অবশেষে অবসান ঘটেছে। 

বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন সম্প্রতি পাঁচজন মেধাবী প্রার্থীকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে একটি সাহসী, ন্যায্য এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এই নিয়োগ হয়েছে সম্পূর্ণভাবে মেধার ভিত্তিতে, যেখানে রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা আদর্শ কোনো ভূমিকা রাখেনি।

নবনিযুক্ত পাঁচজন শিক্ষক হলেন- ড. অনিরুদ্ধ সরকার (ইন্টারডিসিপ্লিনারি ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি), ড. মাসুদ রানা (কৃষিতত্ত্ব বিভাগ), ড. শরিফুল ইসলাম (পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগ), ড. লামিউর রায়হান (কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগ), মো. সাইফুল ইসলাম সাইফ (প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগ)।

নবনিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক ড. অনিরুদ্ধ সরকার জানান, “২০১১ সালে অনার্সে পঞ্চম ও মাস্টার্সে প্রথম হয়েও আমাকে দুইবার শিক্ষক নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল কেবল ছাত্রদলে থাকার কারণে। এমনকি এ নএসআই ভেরিফিকেশনেও রাজনৈতিক পরিচয়ের জন্য চারটি সরকারি চাকরি পাইনি।”

ড. মাসুদ রানা বলেন, “স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত হয়েও আমাকে দুইবার শিক্ষক নিয়োগে বঞ্চিত করা হয়েছিল। আমার চেয়ে কম যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা সুযোগ পেয়েছিলেন শুধু রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে।”

ড. শরিফুল ইসলামের অভিজ্ঞতাও ছিল কষ্টের। তিনি বলেন, “২০১২ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকায় ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাকে হল থেকে বের করে দেয়। বাইরে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে অনার্সে প্রথম হই এবং পরবর্তীতে ডেনমার্ক থেকে উচ্চশিক্ষা নিই। ২০১৮ সালে নিয়োগের জন্য আবেদন করলেও আমাকে উপেক্ষা করা হয়।”

ড. লামিউর রায়হান বলেন, “৪.০০ সিজিপিএসহ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল পেলেও ২০১১ সালের ৫ জুন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমাকে ও ৬৬ জনকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। সশস্ত্র হুমকি পেয়েছি শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা চলাকালে। সে সময় প্রশাসন কোনো সহায়তা করেনি। আজ সেই সমস্ত অন্যায়ের অবসান হয়েছে।”

জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৯৮তম সিন্ডিকেট সভায় কিছু বিতর্কিত নিয়োগ হয়েছিল, যেখানে মেধাবীদের উপেক্ষা করে প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠজনরা অগ্রাধিকার পেতেন। এসব নিয়োগ বাকৃবির ভাবমূর্তিতে কালো ছায়া ফেলেছিল।

বর্তমান প্রশাসন সেই কলঙ্ক মোচনে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। এবারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেবল প্রার্থীদের মেধা, যোগ্যতা ও একাডেমিক কৃতিত্ব বিবেচনা করা হয়েছে। এ নিয়োগ শিক্ষাঙ্গনে এক নীরব বিপ্লবের ইঙ্গিত দেয়, যেখানে প্রমাণ হয়েছে— সততা ও মেধাই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “এটি শুধু পাঁচজনের নিয়োগ নয়, এটি বাকৃবির জন্য একটি নৈতিক বিজয়। আমি নিজেও অনার্সে প্রথম হয়েছিলাম, তাই জানি মেধার মূল্য কতটা। বিগত ১৪ বছরে অনেক যোগ্য প্রার্থী ধর্ম, আদর্শ বা রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা অন্তত কিছুটা হলেও সে অবিচার দূর করতে পেরেছি।”

তিনি আরও বলেন, “এই উদ্যোগ যেন দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও অনুকরণীয় হয়। কারণ মেধার যথাযথ সম্মান ছাড়া একটি জাতি গড়ে ওঠে না।”

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com