
যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের ভাটপিয়ারী ও শাহজাদপুরে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্টে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে।
মাত্র পনেরো দিনের ব্যবধানে ভাটপিয়ারীতে শতাধিক একর ফসলি জমি ও শাহজাদপুরে শতাধিক একর জমি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে মাদরাসা, হাইস্কুল ও প্রাইমারি স্কুলসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। বর্ষা মৌসুমের আগেই নদীভাঙ্গন শুরু হওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে যমুনাপাড়ের মানুষের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যমুনা নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে ভাটপিয়ারী পয়েন্টে প্রায় কয়েকশ মিটার এলাকা জুড়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফসলসহ জমি বিলীন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে কৃষক। দ্রুত ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে পুরো এলাকা বিলীন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হামিদ ও আমজাদ হোসেন জানান, আগেই ভাটপিয়ারী গ্রামটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি-জমিজমা হারিয়ে মানুষকেগুলো কোনোরকম ওয়াপদাবাঁধে আশ্রয় নিয়ে জীবনযাপন করছে। যেটুকু ফসলি রয়েছে সেখানেও গত এক সপ্তাহ যাবত তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। শেষ সম্বলটুকু নদীগর্ভে চলে কৃষকদের না খেয়ে থাকতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা সুইট জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বাঁধের অভ্যন্তরে থাকা ভাটপিয়ারী, শিমলা, পাঁচঠাকুরীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আমরা দ্রুত ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য জোরদাবী জানাচ্ছি।
অন্যদিকে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের চরঠুটিয়া, সোনাতনী ইউনিয়নের মাকড়া, ধীতপুর, কুড়শি, বারপাখিয়া, বড় চামতারা, বানতিয়ার, গালা ইউনিয়নের বৃ-হাতকোড়া ও মোহনপুর গ্রামে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভয়াবহ ভাঙনের কারণে গ্রামগুলোর অধিকাংশ ফসলি জমি, বাড়িঘর, মসজিদ ও মাদ্রাসা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙনকবলিত, মনোয়ারা বেগম জানান, এ পর্যন্ত ১৪ বার বাড়িঘর ও ফসলি জমি যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আবারও ভাঙনের কবলে পড়েছেন। এখন রাত কাটে ভাঙন আতঙ্কে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, সদর উপজেলার ভাটপিয়ারী এলাকায় ভাঙন চলছে। এর পেছনেই স্থায়ী বাঁধ রয়েছে। বাঁধের সামনের চরটা মূলত ভাঙছে। আমরা অবজারভেশন করছি। তিন-চার মাস ধরে নদীটা সেখানে আঘাত করছে সেই জায়গায় ক্ষতি হয়েছে, সেখানে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
আশা করছি বড় ধরনের কোন সমস্যা হবে না। আর শাহজাদপুরের চরাঞ্চল ভাঙছে। সেখানে ভাঙ্গনরোধে কোন প্রকল্প গ্রহণ করা সম্ভব না।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর