
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, পরীক্ষায় ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানো এবং নেকাব নিয়ে কটাক্ষসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুন বিভাগের প্রায় এক ডজন শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ জুন বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ ড. আজিজুল ইসলামকে বিভাগীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। তবে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করার কথা জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ড. আজিজুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে বিভাগের ছাত্রীদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ আচরণ করে আসছিলেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি মার্কসের প্রলোভন দেখিয়ে চেম্বারে কুপ্রস্তাব দিতেন, রাজি না হলে ফেল করানোর হুমকি দিতেন। এছাড়াও ভাইভাতে নেকাব নিয়ে কটাক্ষ করা, মানসিক নির্যাতন, মেয়েদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, পিরিয়ড ও গোপনাঙ্গ নিয়ে কথা বলা, কোর্সে ফেল করানোর হুমকি, ইমোতে ভিডিও কল করা, ভালো সম্পর্ক থাকলে ভালো ফল পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া এবং প্রস্তাবে রাজি না হলে ফল খারাপ করানোর হুমকি দেওয়ার মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।
বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান জানান, ড. আজিজুল ইসলামের কাছে বিভাগের প্রায় প্রত্যেক শিক্ষার্থী কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। তিনি ক্লাসে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতেন এবং মেয়েদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, ওই শিক্ষকের দ্বারা হেনস্তার শিকার অনেক ছাত্রী বিবাহিত হওয়ায় এবং পারিবারিক কারণে এতদিন মুখ খুলতে সাহস পাননি। তিনি আরও বলেন, কয়েকজন ছাত্রী তার যন্ত্রনায় সুইসাইড করার চেষ্টা করেছিলেন। তারা ওই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ড. আজিজুল ইসলাম জানান, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ. কে. এম নাজমুল হুদা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মে ২৬৮তম সিন্ডিকেট সভায় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তার বিরুদ্ধে সমকামিতা, যৌন হয়রানি ও শিক্ষার্থী হেনস্তার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর