কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় মা ও দুই সন্তানকে গণপিটুনি ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার আট আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বুধবার কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ১১ নম্বর আমলী আদালতের বিচারক মমিনুল হক এই আদেশ দেন।

রিমান্ডে নেওয়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল ও ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করে।

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া অন্য আসামিরা হলেন রবিউল আউয়াল, আতিকুর রহমান (৪২), বায়েজ মাস্টার (৪৩), দুলাল (৪৫), আকাশ (২৪), মো. সবির আহমেদ (৪৮) এবং নাজিমুদ্দিন বাবুল (৫৬)।

কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. সাদিকুর রহমান জানান, গণপিটুনির মামলায় সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত প্রত্যেক আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে রিমান্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রিমান্ড শেষে আসামিদের মেডিকেল পরীক্ষা করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কড়ইবাড়ি গ্রামে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে স্থানীয় একটি দল প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তার ছেলে রাসেল মিয়া (২৮) এবং মেয়ে জোনাকি আক্তারকে (২২) গণপিটুনি ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত রুবির মেয়ে রিক্তা বেগম বাদী হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল ও ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়াসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৫ জনকে আসামি করা হয়।

গণপিটুনির মামলাটি প্রথমে বাঙ্গরা থানার পুলিশ কর্মকর্তাকে দেওয়া হলেও পরবর্তীতে সেটি জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তীকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।