
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের কুমরুড়া গ্রামে একটি সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারকে ঘিরে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পরিবারটি চাঁদাবাজি, সশস্ত্র হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে থানায় এজাহার দায়ের করেছে। তবে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও এবং কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বিষয়টিকে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও স্থানীয় তদন্তে তা বিভ্রান্তিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিবনাথ চক্রবর্তী কেন্দুয়া থানায় দাখিল করা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, একই গ্রামের বাসিন্দা মো. রাব্বী ও তার সহযোগীরা গত জুন মাসে তাদের বাড়িতে চাঁদার দাবিতে হামলা চালায়। অভিযোগে বলা হয়, ৮ জুন রাতে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয় এবং ১৪ জুন সকালে রাব্বী ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘরে ঢুকে টেলিভিশন ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। ২৮ জুন রাতে রাব্বী ও তার সহযোগীরা টমটমযোগে এসে বসতঘরে হামলা চালায়, আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং প্রায় ৩০ হাজার টাকার খাদ্যসামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।
এদিকে, ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের কিছু গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে এক নারীকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঘটনার বর্ণনা দিতে দেখা যায়। সেখানে বিষয়টিকে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার মূল কারণ জমি-জমা ও পারিবারিক বিরোধ। অভিযুক্ত রাব্বী ভুক্তভোগী পরিবারের নিকটাত্মীয় এবং সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে।
২০২৫ সালের ১০ জুলাই বলাইশিমুল গ্রামে স্থানীয়ভাবে আয়োজিত এক সালিশে শিবনাথ চক্রবর্তী নিজেই স্বীকার করেন যে, ঘটনাটিকে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ হিসেবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তিনি এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিবারটি নিরাপদে আছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর