
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবনে দেশের অবস্থানকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে দুই মাসে ২৮টি জাতীয় কনফারেন্সের আয়োজন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের এই উদ্যোগ দেশের ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও গবেষণায় উৎসাহিত করবে।
চলতি বছরের ২৪ মে থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত কনফারেন্সগুলোতে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের স্বনামধন্য গবেষকরা সরাসরি ও ভার্চুয়ালি প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি), কুয়েট ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)-সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন। এতে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন উদ্ভাবন ও গবেষণা বিষয়ক পোস্টার উপস্থাপন করেন।
যবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ তাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতি দুই বছর পরপর প্রতিটি বিভাগের অধীনে অন্তত একটি ন্যাশনাল কনফারেন্স আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া ৮টি অনুষদের অধীনে একটি করে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সের আয়োজন করা হবে। গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের উদ্ভাবনী সেল গঠনের কথা জানিয়েছেন যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মজিদ।
ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) প্রকাশিত “এশিয়া ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২৫” এবং নেদারল্যান্ডভিত্তিক "এলসেভিয়ার র্যাঙ্কিং ২০২৫"-এ দেশের সেরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে যবিপ্রবি। ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবরে প্রকাশিত 'ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং'-এ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যবিপ্রবি দেশসেরা স্থান অর্জন করেছে। এছাড়া এলসেভিয়ার র্যাঙ্কিংয়ে ২০২২ সাল থেকে টানা চতুর্থবারের মতো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
কনফারেন্স কার্নিভাল প্রসঙ্গে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মজিদ বলেন, এই কনফারেন্স কার্নিভালের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা গবেষণায় আরও বেশি মনোযোগী হবে। এর ফলশ্রুতিতে উদ্ভাবন বাড়বে, যা বাণিজ্যিকভাবে দেশকে লাভবান করবে এবং অর্থনৈতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বনির্ভর করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা চাকরির পেছনে না ছুটে গবেষক ও উদ্যোক্তা হতে পারবে এবং দেশের মেধা বিদেশে পাচার হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
উপাচার্য আরও জানান, শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনশক্তি ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা, সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে মানবিক মানুষ হিসেবে তৈরি করা, গবেষণায় যবিপ্রবিকে আরও উন্নতকরণ, শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা এবং উচ্চশিক্ষা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করাই এই কার্নিভালের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এছাড়া গবেষক, ট্রেইনার ও শিক্ষার্থীদের একই ছাতার নিচে এনে পারস্পরিক জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের করে তোলা এবং যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি করাও এই আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর