
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহত এক শিক্ষার্থীর বাড়ি জুড়ে চলছে শোকের মাতম। সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে তাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ ভারী হয়ে ওঠে। নিহত ফাতেমা আক্তার (৯) উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের কুনিয়া গ্রামের বনি আমিন ও রুপা দম্পতির মেয়ে। সে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। ফাতেমার বাবা বনি আমিন কুয়েত প্রবাসী, ঘটনার খবর পেয়ে তিনি বাংলাদেশে চলে এসেছেন।
নিহত ফাতেমা আক্তারের ফুফু ইয়াসমিন আক্তার কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, "আমার ভাইঝি ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো। কালকে দুর্ঘটনায় মারা যায়। ওকে আমরা প্রথমে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরবর্তীতে আমরা ঢাকার সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) সাড়ে সাতটার দিকে ওকে পাই। এরপর ওখান থেকে আমরা রাত তিনটার দিকে খুলনায় নিয়ে আসি। ওর ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল যে ডাক্তার হবে। আমাদেরও স্বপ্ন ছিল যে ফাতেমাকে ডাক্তার বানাবো, কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। ছোটবেলা থেকে ও শান্তশিষ্ট একটা মেয়ে ছিল, আমাদের সবার চোখের মণি। ফাতেমা সবার বড়, ওর ছোট দুটো ভাই আছে। ও ছোটবেলা থেকে পড়াশোনায় ভালো ছিল, একবার বললেই ওর সব কিছু মনে থাকতো। কালকে ওর স্কুলটা ছুটি হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু ও কোচিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। আজ সে লাশ হয়ে বাড়িতে এল, আমরা আসলে কীভাবে যে বলব বুঝতে পারছি না, আমাদের বলার আর ভাষা নেই।"
নিহত ফাতেমার চাচাতো ভাই আমিনুল ইসলাম বলেন, "সকালেই ফাতেমার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। আমি জানাজা পড়িয়েছি, ভাষায় পারব না কতটা কষ্ট হয়েছে।" জানাজা শেষে গ্রামের কুনিয়া কওমি মাদ্রাসা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটের দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ফাতেমাসহ একাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।
সর্বশেষ খবর