
রাজধানীর বাসাবোর দক্ষিণগাঁও এলাকায় ভাড়াটিয়া সেজে গৃহকর্ত্রী হাসিনা বেগমকে হত্যার ঘটনা ঘটেছিল দুই বছর আগে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন থাকলেও অভিযোগপত্রভুক্ত ছয় আসামিই জামিনে থেকে ভুক্তভোগী পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে আতঙ্কে দিন কাটছে নিহতের স্বজনদের।
২০২৩ সালের ৯ মে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাসিনা বেগমের মেয়ে উম্মে কুলসুম জানান, সেদিন দুপুরে দুই নারী ও এক পুরুষ ভাড়া নেওয়ার কথা বলে বাসায় আসেন। আগের দিন তারা অগ্রিম ভাড়া হিসেবে ৫০০ টাকা দিয়েছিলেন। সেদিন দুই নারী বাসায় ঢুকে হাসিনা বেগমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে শরবত বানিয়ে খাওয়ান এবং চুলে মেহেদি লাগিয়ে দেন। শরবত খাওয়ার কিছুক্ষণ পর গৃহকর্ত্রী অচেতন হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ জুন তাঁর মৃত্যু হয়।
কুলসুম আরও জানান, ঘটনার দিন তাঁর বাবা ইউসুফ আলী বাসার সামনের মুদি দোকানে ছিলেন। ভাড়া নিতে আসা পুরুষটি দোকানেই অবস্থান করছিলেন। ঘটনার পর প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মা মারা যান।
ঘটনার পর ইউসুফ আলী বাদী হয়ে সবুজবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্তে ছয় আসামিকে গ্রেপ্তার করে—তারা হলো মো. রফিক, লিপি, কুলসুম, সীমা, বিল্লাল হোসেন ও মুক্তা বেগম। আসামিদের মধ্যে বিল্লাল ও মুক্তা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা জানান, পরিকল্পিতভাবে বাসায় প্রবেশ করে গৃহকর্ত্রীকে অচেতন করে টাকা-পয়সা ও গহনা লুট করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। তদন্তে আরও উঠে আসে, তারা নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ফেনী, খুলনা ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় একই কায়দায় অপরাধ চালিয়ে আসছিল।
তবে অভিযোগপত্র দাখিলের আগেই আসামিরা জামিনে বের হয় এবং তখন থেকেই ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিতে থাকে। এ বিষয়ে কুলসুম বলেন, “আসামিরা ফোনে হুমকি দিয়েছে। অপরিচিত দুজন আমাদের সরাসরি এসে বলেছে, মামলা চালিয়ে কিছুই হবে না, বরং টাকা নিয়ে মীমাংসা করতে।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম কাইয়ুম বলেন, এ মামলায় ইতিমধ্যে দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তবে আসামিরা সবাই জামিনে থাকায় ভুক্তভোগী পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
সুত্র: সম কাল
সর্বশেষ খবর
সংবাদপত্রের পাতা থেকে এর সর্বশেষ খবর