
রাজবাড়ীর পাংশা পৌর শহরের শিল্পকলা মোড় এলাকার দিশা মেডিকেয়ার হাসপাতাল ও গাইনি ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আনজুয়ারা সুমির বিরুদ্ধে আনা গুরুতর চিকিৎসা অবহেলা ও অপচিকিৎসার অভিযোগ দুই দিন পর প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট বালিয়াকান্দির নারুয়া ইউনিয়নের বিলধামু গ্রামের মো. ইব্রাহিম সুলতান তাঁর ছোট বোন ফাতেমা খাতুন (১৮)-এর চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
লিখিত অভিযোগে ইব্রাহিম সুলতান দাবি করেন, গত ১৬ জুলাই তাঁর বোন প্রসব বেদনা নিয়ে দিশা মেডিকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ডা. আনজুয়ারা সুমি সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করান। সন্তানের জন্মের পর ২-৩ দিন হাসপাতালে থাকার পর তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তবে প্রায় ২০ দিন পর ফাতেমার পেটে তীব্র ব্যথা ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। গত ৪ আগস্ট ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আল্ট্রাসনোগ্রামসহ বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় যে, সিজারিয়ানের সময় গর্ভাশয়ের ভিতরে 'ফুল' পুরোপুরি অপসারণ করা হয়নি, যা গুরুতর ইনফেকশন ও রক্তক্ষরণের কারণ। এরপর তাকে ফরিদপুর নূর স্পেশালিস্ট হাসপাতালে দুই দিন চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৪ আগস্ট তাকে ফরিদপুর বেস্ট কেয়ার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করতে হয়। অভিযোগে বলা হয়, ফাতেমা খাতুন বর্তমানে মৃত্যুশয্যায় আছেন এবং চিকিৎসাবাবদ ইতোমধ্যে প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়ে গেছে। অভিযোগকারী দাবি করেন, রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ার পর দিশা মেডিকেয়ার কর্তৃপক্ষ ও ডা. আনজুয়ারা সুমি অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
তবে এই অভিযোগ দায়েরের দুই দিন পর, অর্থাৎ ২৭ আগস্ট, ইব্রাহিম সুলতান নিজেই জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন ও রাজবাড়ী সেনা ক্যাম্পে গিয়ে তাঁর দায়ের করা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। প্রত্যাহারপত্রে তিনি উল্লেখ করেন যে, কোনো প্রকার আর্থিক প্রলোভন, ভয়ভীতি বা অন্য কোনো কারণে নয়, নিজ ইচ্ছায় তিনি ডা. আনজুয়ারা সুমি ও দিশা মেডিকেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন।
এ বিষয়ে দিশা মেডিকেয়ার হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডা. আনজুয়ারা সুমি নিয়মিতভাবেই সেখানে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন। ডা. সুমি বলেন, "আমরা যথাযথভাবে রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে চেষ্টা করি। কোনো চিকিৎসক বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চায় না তাদের জন্য কোনো রোগীর খারাপ হোক। সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন হয়েছিল। অভিযোগকারী নিজের ভুল বুঝতে পেরে তাঁর অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আমি নিয়মিত দিশা মেডিকেয়ার হাসপাতালে রোগী দেখছি, কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।"
অভিযোগকারী ইব্রাহিম সুলতানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাসুদ বলেন, "একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছিলাম, তবে ওই অভিযোগকারী তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।"
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর