
দেশের ৫ জেলায় বজ্রপাতে একদিনে ৯ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৩ জন কৃষক ও ২ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। রোববার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকে রাত ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বজ্রপাতে মৃত্যুর এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
কুমিল্লা
কুমিল্লার হোমনায় বজ্রপাতে একসঙ্গে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার দুপুরে উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, দুপুরে এলাকায় ভারি বৃষ্টি শুরু হলে ভবানীপুর ঘাটে উজানচর-ঘাগুটিয়া খেয়া পারাপারের জন্য কয়েকজন অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়।
মৃতরা হলেন, হোমনা উপজেলার নালা দক্ষিণ গ্রামের মৃত হাজি মতিউর রহমানের মেয়ে মমতাজ বেগম (৩৭) ও জাকিয়া (২৩) এবং অপরজন দুলালপুর ইউনিয়নের খোদেদাউদপুর গ্রামের রাহিনুর ইসলামের ছেলে রাশেদ মিয়া (২২)।
ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের সদর ও শৈলকুপা উপজেলায় মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সকালে সদর উপজেলার আড়মুখী ও শৈলকুপা উপজেলার শেখরা গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে সদর উপজেলার আড়মুখী গ্রামের শিমুল বিশ্বাস বাড়ির পাশের মাঠে নিজ জমিতে কাজ করছিলেন। বৃষ্টি শুরু হলে অন্যদের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন; এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
অপরদিকে, শৈলকুপা উপজেলার শেখরা গ্রামের হুরমত শেখও বাড়ির পাশের মাঠে কাজ করছিলেন। বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হলে বাড়ি ফিরতে গিয়ে বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া দুই কৃষকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রায়শই বজ্রপাতে দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই বৃষ্টি বা বজ্রপাতের সময় খোলা আকাশের নিচে থাকা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বজ্রপাতে মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের কালিকাপুর এলাকায় মাদ্রাসা থেকে ফেরার সময় বজ্রপাতে মোহাম্মদ বাবলু মিয়া নামে শিশুর মৃত্যু হয়। বাবলু ওই এলাকার নূর হোসেনের ছেলে। স্থানীয় একটি এবতেদায়ী মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে সে। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় শিশু বাবলু।
এদিকে একই উপজেলার বামনডাঙা ইউনিয়নের চর লুচনি গ্রামে বজ্রপাতে সহিবর নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সহিবর ওই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।
পুলিশ জানায়, সকাল ১০টার দিকে বাড়ির পাশে গরুর খাবারের জন্য ঘাস তুলতে গেলে বজ্রপাতে আহত হয়। পরে দ্রুত নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পথে মারা যায়। পরে মরদেহ ফিরিয়ে নিয়ে দাফন করে পরিবারের লোকজন।
নাগেশ্বরী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি।
বগুড়া
বগুড়ায় বজ্রপাতে শেফালি বেগম (৫০) এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে গাবতলী উপজেলার নারুয়ামালা ইউনিয়নের মধ্যমারছেও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শেফালি বেগম ওই গ্রামের দেলোয়ার প্রামাণিকের স্ত্রী।
জানা গেছে, দুপুরে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে শেফালি বেগম বাড়ির পাশে ইছামতী নদীর তীরে তীরমোহনী মাঠে গরুর জন্য ঘাস কাটতে যান। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাতের আঘাতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে৷ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
গাইবান্ধা
দুপুরে গাইবান্ধার সাঘাটায় বজ্রপাতে আব্দুল আজিজ (৪৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দীঘলকান্দী গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে।
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর