গাজায় বহু মাসের ভয়াবহ যুদ্ধের পর কার্যকর হয়েছে এক ঐতিহাসিক যুদ্ধবিরতি। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিশর ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি বাস্তবায়ন শুরু হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন—টেকসই শান্তি ও পুনর্গঠনের পথ এখনো অনিশ্চিত ও জটিল।
বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধবিরতির পর গাজার প্রশাসন, নিরাপত্তা ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে এখনো স্পষ্ট কোনো রূপরেখা নেই।
হামাসের অস্ত্র ত্যাগ, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং গাজার শাসন কাঠামো—সবকিছুই এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।
বড় চ্যালেঞ্জ
এপি (Associated Press)-এর এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির পরও গাজার সামনে রয়ে গেছে একাধিক গুরুতর চ্যালেঞ্জ।
প্রথমত, গাজার রাজনৈতিক প্রশাসন কে পরিচালনা করবে তা এখনো নির্ধারিত নয়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ, আঞ্চলিক রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধায়ক—সব বিকল্পই আলোচনায় রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, ইসরায়েলি বাহিনী কবে ও কীভাবে গাজা থেকে সরে যাবে, সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময়সূচি ঘোষিত হয়নি।
তৃতীয়ত, যুদ্ধবিধ্বস্ত অবকাঠামো পুনর্গঠনই এখন সবচেয়ে বড় মানবিক চ্যালেঞ্জ। ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা—সবই প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সহায়তার ধারাবাহিকতা, অর্থের স্বচ্ছ ব্যবহার ও রাজনৈতিক আস্থাহীনতাও শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
সম্ভাব্য সমাধান ও করণীয়
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজার পুনর্গঠন ও স্থিতিশীলতার জন্য দ্রুত কিছু পদক্ষেপ জরুরি।
এর মধ্যে রয়েছে—
যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে একটি আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা গঠন,
অবিলম্বে মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন প্রকল্প শুরু,
গাজার স্থানীয় নেতৃত্বকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করা, এবং
আন্তর্জাতিক সহায়তায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
তারা আরও মনে করেন, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, সীমান্ত নির্ধারণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন আলোচনার পথ খুললেই কেবল গাজায় টেকসই শান্তির বাস্তব ভিত্তি তৈরি হতে পারে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর