
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে জয় বা পরাজয় যাইহোক না কেন তা মেনে একসঙ্গে কাজ করার কথা জানিয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে আইটি ভবনে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সাইদ বিন হাবিব বলেন, ভোট দেওয়া শিক্ষার্থীদের মৌলিক ও ব্যক্তিগত অধিকার। শিক্ষার্থীরা যাকে যোগ্য মনে করবেন, তিনিই নির্বাচিত হবেন—এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি আমাকে নির্বাচিত করেন, তবে আমি তাদের কল্যাণে কাজ করব, ইনশাআল্লাহ। শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাব। স্বপ্নের মতো একটি সুন্দর ও আধুনিক ক্যাম্পাস নির্মাণে আমি বদ্ধপরিকর। বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি প্রকৃত একাডেমিক ক্যাম্পাসে রূপ দিতে চান বলেও জানান তিনি।
সকাল ৯টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় এ ভোটগ্রহণ। যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ এবং কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ, আইটি ভবন মোট পাঁচটি ভবনে ১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে।
ভোটগ্রহণকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিমের পাশাপাশি মাঠে আছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, এপিবিএন ও আনসার সদস্যসহ সেনাবাহিনীর রিজার্ভ ফোর্স। সব কেন্দ্রেই স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তায় ১হাজার ৫০ জন পুলিশ এপিবিএন ও সাইকেল আকারে ৪০ জন র্যাব মেতায়ন আছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরিচয় পত্র ছাড়া কাউকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছেনা। এছাড়াও যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় থাকবে রিজার্ভ ফোর্স।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২৭ হাজার ৫১৬ জন শিক্ষার্থী ভোটদানের জন্য যোগ্য, এর মধ্যে ৯টি ছাত্র হলে ১৬ হাজার ১৮৪ জন এবং ছয়টি ছাত্রী হলে ১১ হাজার ৩৩২ জন ভোটার রয়েছেন। চাকসু ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৯০৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চাকসুতে ২৬ পদের বিপরীতে ৪১৫ জন এবং হল সংসদে বিভিন্ন পদের জন্য ৪৯৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ২৪ জন প্রার্থী ইতিমধ্যে জয়লাভ করেছেন।
এবার নির্বাচনে ১২টি প্যানেল লড়ছে। সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২২ জন এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হল কাউন্সিল নির্বাচনে ভিপি পদে ২৬ জন, জিএস পদে ২৮ জন এবং এজিএস পদে ৩০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ছয়টি ছাত্রী হলে ভিপি এবং এজিএস পদে ১২ জন করে প্রার্থী এবং জিএস পদে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গেল ২৮ অগাস্ট চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এরপর ১ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর যাচাই-বাছাই শেষে ১১ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। একই মাসের ১৪ তারিখ শুরু হয় মনোনয়ন পত্র বিতরণ। যা শেষ হয় ১৭ সেপ্টেম্বর। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে ২১ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেপ্টেম্বরের ২৫ তারিখ প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এরপর নির্বাচনের জন্য ১২ অক্টোবর দিন ঠিক করা হলেও পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেটি পিছিয়ে ১৫ অক্টোবর করা হয়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর