• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪৮ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:০৫ দুপুর

দুবাই-লন্ডনে সাবেক মন্ত্রী জাবেদের ৫৯৭ বাড়ি

ফাইল ফটো

নিজ প্রতিষ্ঠান এবং অস্তিত্বহীন কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। 

সেই অর্থ দিয়ে দুবাই, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে কেনেন ৫৯৭টি বাড়ি। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ছায়ায় থেকে বেপোরোয়াভাবে ঋণ নিলেও নিশ্চুপ ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাছবিচার ছাড়াই ব্যাংকও মুক্তহস্তে ঋণ দিয়েছে। কখনো কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে ঋণ নিয়েছেন আবার কখনো এক মোবাইল নম্বর দিয়ে ১২টি ব্যাংক হিসাব খুলেছেন। 

অর্থ পাচারের গতিপ্রকৃতি মুছতে এমন কোনো অনৈতিক উপায় নেই, যা তিনি গ্রহণ করেননি। বিএফআইইউ-এর প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অর্থ পাচার এবং ব্যাংকিং খাতে ঋণ কেলেঙ্কারির তথ্য একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) অর্থ পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ঘাটন করে। এর মধ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের অর্থ পাচার এবং ঋণ কেলেঙ্কারি অন্যতম।

বিএফআইইউ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৪ সালে ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের আধিক্য পরিলক্ষিত হয়। ২০১৪-২০১৮ সালে বিভিন্ন অস্তিত্বহীন ও ভুয়া প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ঋণ নেন তিনি। এ সময় বিদেশে সম্পদ অর্জন করেন।

কীভাবে বেনামি ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়েছে, এর বিস্তারিত বিএফআইইউ-এর অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। জাবেদ ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২৩১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেন।

পরবর্তী সময়ে সেই ঋণের টাকার একটি অংশ তার মূল প্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমা করা হতো। আরেকটি অংশ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়ে নগদ আকারে উত্তোলন করা হয়। ঋণের কিছু অংশ সরাসরি হুন্ডির মাধ্যমে দুবাইয়ে জেবা ট্রেডিং কোম্পানির নামে পাঠানো হতো। পরে সেই অর্থ পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে জাবেদের নামে থাকা কোম্পানিতে। একইভাবে আরামিট গ্রুপ থেকেও ওভার ইনভয়েসিং করে এলসির মাধ্যমে হংকংয়ের প্রতিষ্ঠানে বাইরুটে পাঠানো হতো। পরে সেই অর্থ যায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে তার নামে থাকা কোম্পানিতে।

এদিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর অর্থ পাচারের প্রমাণ পাওয়ায় ৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মানি লন্ডারিং মামলা করে। সিআইডির তথ্যমতে, দুবাইয়ে ১২০০ কোটি টাকা পাচার করেছেন জাবেদ। এই অর্থ দিয়ে ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের বার্শা সাউথ, থানিয়া, গালফ কমার্শিয়াল, খাইরান, বুর্জ খলিফা, জাবাল আলী, ওয়ার্ল্ড আইল্যান্ড, জাবিল দ্বিতীয়, মার্শা দুবাই, মিআইসেম, নাদ আল সেবা ফার্স্ট, ওয়াতি আল সাফা-৩-সহ বিভিন্ন স্থানে ২২৬টি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এছাড়া স্ত্রী রুকমিলা জামানের নামে দুবাইয়ের আল বার্শা সাউথ-৩, কিউ গার্ডেনস বৌটিক রেসিডেন্স ব্লক ‘বি’ নামে দুটি সম্পত্তি থাকার তথ্য পেয়েছে সিআইডি।

কোন দেশে কত বাড়ি-ফ্ল্যাট : দুবাই, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের বাড়ি-ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে বিএফআইইউ। এর বাইরেও অন্য দেশে তার সম্পদ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে জাবেদের বাড়ি আছে ৩৬০টি, যার বাজারমূল্য ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। দুবাইয়ে বাড়ি-ফ্ল্যাট আছে ২২৬টি, যার বাজারমূল্য ১ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ও নিউইয়র্কে ৯টি বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া স্ত্রী রুকমিলা জামানের নামে দুবাইয়ে ২টি বাড়ির খোঁজ পাওয়া গেছে। যার বাজারমূল্য সাড়ে ৭ কোটি টাকার বেশি।

ঋণ জালিয়াতি ঢাকতে লেয়ারিং : সাইফুজ্জামান চৌধুরী অর্থ পাচার ও ঋণ জালিয়াতি ঢাকতে লেয়ারিং করেন। যেমন: ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মডেল ট্রেডিংয়ের অনুকূলে ইউসিবি ব্যাংকের কাওরান বাজার শাখা থেকে ২১ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন হয়। এই ঋণ অনুমোদনের আগেই অর্থছাড় করা হয়। একইভাবে ইউসিবি ব্যাংকের চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখায় ইমিন্যান্ট ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ২০ কোটি টাকার ঋণ আবেদন করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি ওই ঋণ অনুমোদন হয়, ওইদিনই ১৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকার চেক ইস্যু করা হয় ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং, ক্লাসিক ট্রেডিং ও মডেল ট্রেডিংয়ের নামে। ৩টি প্রতিষ্ঠানই আবার ইউসিবির পোর্ট শাখার পার্কিং সেটেলমেন্ট হিসাবে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ওই অর্থ জমা দেয়। পরবর্তী পোর্ট শাখা থেকে পে-অর্ডার ইস্যুর মাধ্যমে টাকা ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে জমা হয়। ওই টাকা মূলত ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে আরামিট সিমেন্টের নামে থাকা ঋণ সমন্বয় করা হয়।

অপরদিকে মেসার্স এসএস ট্রেডিং নামের আরেকটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান ইউসিবি ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ৫০ কোটি টাকা ঋণ নেয়। ঋণের অর্থ দিয়ে এসএস ট্রেডিংয়ের নামে থাকা ইস্টার্ন ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করা হয়। আইনানুযায়ী এক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আরেক ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ ব্যাংকিং রীতিনীতির পরিপন্থি। এছাড়াও শাকিল এন্টারপ্রাইজ, সুপিরিয়র রেডি মিক্স কনক্রিট, এন মোহাম্মদ ট্রেডিং করপোরেশন ও সাবিসা মাল্টিট্রেড নামে আরও কয়েকটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামমাত্র জামানতের বিপরীতে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়া হয়। যার পেছনে কলকাঠি নাড়েন সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

এক মোবাইল নম্বরে ১২ কোম্পানির ব্যাংক হিসাব : আব্দুল আজিজ নামের এক কর্মচারীর মোবাইল নম্বর দিয়ে ইউসিবি ব্যাংকের ৮ শাখায় ১২টি কোম্পানির ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। এগুলো হচ্ছে-লুসেন্ট ট্রেডিং, আরামিট ফুটওয়্যার, ক্যাপিটাস অ্যাসেট, জেনেসিস ট্রেড ম্যানেজমেন্ট, গোলামুর রহমান, ইয়াসিন অ্যান্ড ব্রাদার্স, পদ্মা ট্রেডিং, ক্রিসেন্ট ট্রেডিং, ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং, মডেল ট্রেডিং ও ভিশন ট্রেডিং। মূলত দুর্নীতি, জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত অর্থের গতিপথ পরিবর্তন করতে এই কাজ করেন সাইফুজ্জামান।

ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের বিষয়ে জানতে সাইফুজ্জামানের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]