আমাদের দৈনন্দিন জীবন সুস্থ ও সুন্দর রাখতে কিছু অভ্যাস তৈরি করা উচিত। ছোট ছোট সাতটি অভ্যাস যদি আপনি অনুশীলন করতে পারেন, তাহলে আপনার জীবন ইতিবাচকভাবে বদলে যাবে, যা নিজেই অনুভব করতে পারবেন।
তবে শর্ত হলো, টানা এক মাস এই অভ্যাসগুলো অনুসরণ করতে হবে। এমনই ৭টি অভ্যাসের কথা জেনে নেওয়া যাক।
১. সকালে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস পানি
সকালে চা, কফি বা অন্য কিছুর দিকে হাত বাড়ানোর আগে এক গ্লাস পানি খান। সারা রাত পানিশূন্যতার পর শরীরের সব কোষে পানি পৌঁছাবে। এটা আপনার মেটাবলিজম সিস্টেমকে ভালো রাখবে। সারা দিন মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
২. দিনে ১০ মিনিট কিছুই না
প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট সময় রাখুন কিছুই না করার জন্য। এই সময় কিছু করবেন না। চেষ্টা করবেন এই সময়ে কিছু না ভাবার। চুপচাপ বসে কোনো একটা দিকে তাকিয়ে থাকুন বা গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলন করুন।
৩. যদি…দিয়ে ইতিবাচক চিন্তা
যদি…কাজটা ঠিকমতো না হয়? এত কিছুর পর যদি সফল না হই? এককথায় ‘যদি’ দিয়ে শুরু হওয়া কোনো বাক্য নেতিবাচকভাবে শেষ করবেন না; বরং ইতিবাচক চিন্তার অনুশীলন করুন।
৪. যে অ্যাপ আপনাকে তেমন কিছুই দিচ্ছে না তা ডিলিট করুন
যে অ্যাপ আপনাকে তেমন কিছুই দিচ্ছে না, কেবল সময় কেড়ে নিচ্ছে, এমন অ্যাপ ডিলিট করুন। স্ক্রিনটাইম আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করার আগে আপনি স্ক্রিনটাইম নিয়ন্ত্রণ করুন। প্রতিদিন স্ক্রিনটাইম চেক করুন। কেবল বিনোদনের উদ্দেশ্যে হলে সেটাকে ৪০ মিনিটের মধ্যে নিয়ে আসুন।
৫. প্রতিদিন ১০ পৃষ্ঠা করে পড়ুন
পড়া আপনার মনকে সচল এবং তীক্ষ্ণ রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়ের মধ্যে একটি। দিনে মাত্র ১০ পৃষ্ঠা নতুন ধারণা তৈরি করতে পারে, দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করতে পারে এবং স্ক্রিন থেকে বিরতি দিতে পারে। তা হতে পারে যেকোনো ধরনের বই। আপনার আগ্রহের বিষয়গুলো বেছে নিন এবং পড়ার অভ্যাস ধরে রাখুন।
৬. ‘নো-লিস্ট’ বানান
২০২৬ সালে কোন কোন বিষয় আপনি নিজের জীবন থেকে বিদায় করতে চান? তার একটা তালিকা তৈরি করুন। সেটা হতে পারে অবমাননাকর সম্পর্ক, অতিরিক্ত চিনি খাওয়া বা ঘুমাতে ঘুমাতে রাত দুইটা বাজিয়ে দেওয়া। এখন থেকেই সেসব বিদায় করার জন্য মনস্থির করুন, অনুশীলন শুরু করুন।
৭. সপ্তাহে এক দিন মুঠোফোনকে ছুটি দিন
সপ্তাহে এক দিন আপনার মুঠোফোনটাকে ছুটি দিন। নিজেও বিরতি নিন। এদিন পরিবারকে সত্যিকারের সময় দিন। প্রকৃতির সংস্পর্শে সময় কাটান। একেক সপ্তাহে আপনার কাছেপিঠে প্রাকৃতিক পরিবেশে চড়ুইভাতি করতে পারেন। সন্ধ্যায় বইয়ের দোকানে বেড়িয়ে আসুন। অথবা পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে মন খুলে গল্প করুন।
শেষ কথা
প্রতিদিন চেষ্টা করবেন আগের দিনের চেয়ে ১ শতাংশ বেশি ‘ইনপুট’ দিতে। হয়তো কয়েক পৃষ্ঠা বই বেশি পড়লেন বা আরেকটু আগে ঘুমাতে গেলেন। অথবা চোখের সামনে একটা অস্বাস্থ্যকর, লোভনীয় খাবার আপনার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলেও পাত্তা দিলেন না।
প্রতি সপ্তাহে আপনি কী ভালো করলেন, কোন ক্ষেত্রে আরও উন্নতি করা প্রয়োজন, কী কী ভালো ঘটনা ঘটল আপনার জীবনে, কোন কোন বিষয়ের জন্য আপনি কৃতজ্ঞ—তার একটা তালিকা করুন। বছর শেষে ৫২টি তালিকা মিলিয়ে দেখুন, কী এবং কতটা পরিবর্তন হলো।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর