চ্যাম্পিয়নস লিগে আরেকবার ত্রাতা হয়ে উঠলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। মাত্র সাত মিনিটের ব্যবধানে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকসহ চার গোল করে অলিম্পিয়াকোসের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদকে দিলেন শ্বাসরুদ্ধকর ৪-৩ ব্যবধানে জয়।
বাংলাদেশ সময় বুধবার (২৬ নভেম্বর) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগে এই জয়ে রিয়াল তাদের সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তিন ম্যাচের জয়হীন ধারা ভাঙল।
ম্যাচের শুরুতেই গ্রিসের ক্লাব অলিম্পিয়াকোস গোল করে এগিয়ে যায়। চিকিনিয়ো ২০ গজ দূর থেকে দারুণ এক শটে গোল করেন। তবে এখান থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন এমবাপ্পে।২২ মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দুর্দান্ত পাস ধরে এমবাপ্পে দৌড়ে গিয়ে গোলরক্ষক কোস্তাস জোলাকিসের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে পাঠান। দুই মিনিট পর আরদা গুলেরের ক্রস থেকে নিচু হেডে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন তিনি।
মাত্র ছয় মিনিট ৪২ সেকেন্ডের মধ্যে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন এমবাপ্পে। ডিফেন্স ভেঙে এগিয়ে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় বল পাঠান জালে। চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম হ্যাটট্রিক। লিভারপুলের মোহামেদ সালাহ ২০২২ সালে রেঞ্জার্সের বিপক্ষে আরও দ্রুত হ্যাটট্রিক করেছিলেন।
প্রথমার্ধে চোট পাওয়া চিকিনিয়োর বদলি হিসেবে নামা মেহদি তারেমি ৫২ মিনিটে দারুণ হেডে গোল করে অলিম্পিয়াকোসকে ম্যাচে ফেরান। থিবো কোর্তোয়া অসুস্থ থাকায় আন্দ্রি লুনিন রিয়ালের গোলপোস্ট সামলাচ্ছিলেন।
গ্রিসে এর আগে সাতবার গিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ কখনো জিততে পারেনি। কিন্তু এমবাপ্পে সেই ইতিহাসও বদলে দিলেন। ভিনিসিয়ুসের কাছ থেকে বল পেয়ে নিজের চতুর্থ গোলটি করেন তিনি।
এই গোলের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে এমবাপ্পের মোট গোল দাঁড়াল পাঁচ ম্যাচে নয়টিতে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভিক্টর ওসিমহেনের চেয়ে তিনি তিন গোল এগিয়ে।
শেষ দিকে আয়ুব এল কাবি গোল করে ব্যবধান কমালেও রিয়াল নিজেদের লিড ধরে রেখে ম্যাচ জিতে নেয়। পাঁচ ম্যাচে এটি রিয়ালের চতুর্থ জয়। লিভারপুলের কাছে শেষ ম্যাচে হারের পর তারা এই বড় জয় দিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ালো।
অন্যদিকে বায়ার্নকে মৌসুমের প্রথম হারের তেতো স্বাদ দিল আর্সেনাল।
আর্সেনালের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে চলতি মৌসুমে কোনো ম্যাচ হারেনি বায়ার্ন। ছন্দেও ছিল জার্মান ক্লাবটি। তবে গানারদের ঘরের মাঠে এক প্রকার উড়ে গেল কম্পানির দল। এদিকে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ১০ জনের পিএসজির কাছে হেরেছে টটেনহ্যাম।
আর্সেনাল ৩-১ বায়ার্ন মিউনিখ
এমিরেটস স্টেডিয়ামে প্রথম হাফে দুই দলই সমানে সমান লড়াই করেছে। তবে বিরতির পর বায়ার্নকে আর পাত্তাই দেয়নি আর্তেতার দল। ম্যাচের ২২তম মিনিটে গানারদের এগিয়ে দেন টিম্বার। বুকায়ো সাকার কর্নারে লাফিয়ে হেডে জালে বল পাঠান এই ডাচ ডিফেন্ডার।
জবাব দিতে অবশ্য বেশি সময় লাগেনি বায়ার্নের। ৩২তম মিনিটে চমৎকার দলীয় নৈপুণ্যে সমতায় ফেরে তারা। মাঝমাঠ থেকে কিমিচের বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোল করেন কার্ল। বিরতির পর শুধু স্বাগতিকরাই খেলে গেছে।
৬৯তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল পায় আর্সেনাল। বাঁ-দিক থেকে বক্সে কালাফিওরির পাস দারুণ ফিনিশিংয়ে জালে পাঠান মাদুয়েকে। আর ৭৭তম মিনিটে নয়ারের ভুলে বায়ার্নকে তৃতীয় গোলের তেতো স্বাদ দেন গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি।
৫ ম্যাচের সবকটিতে জিতে টেবিলের শীর্ষে আর্সেনাল। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে বায়ার্ন।
একই দিনে আরেক ম্যাচে পিএসজি ৫-৩ টটেনহ্যাম
এদিকে রাতের আরেক ম্যাচে পিএসজির বিপক্ষে এগিয়ে থাকার পরও শেষ পর্যন্ত হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে টটেনহ্যাম। ৮ গোলের এই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন পিএসজির পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ভিতিনহা।
পিএসজির হয়ে বাকি দুইটি গোল আসে পাচো ও রুইজের পা থেকে। এদিকে ম্যাচের ৫০ মিনিটে পর্যন্ত ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল টটেনহ্যাম। লন্ডনের ক্লাবটির হয়ে প্রথম দুইটি গোল করেন কোলো মুয়ানি এবং রিচার্লিসন। এরপর তিন গোল হজম করে তারা। ম্যাচের ৭২তম মিনিটে মুয়ানি গোল করলে লড়াই জমে ওঠে। তবে শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্পারসরা। ম্যাচের যোগ করা সময়ে লাল কার্ড দেখেন পিএসজির লুকাস হার্নান্দেজ।
৫ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে বায়ার্ন থেকে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে দুই নম্বরে অবস্থান করছে পিএসজি। সমান ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে ১৬ নম্বরে টটেনহ্যাম।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর