পাবনায় তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হলেও সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় প্রধান শিক্ষকরা পরীক্ষা নিচ্ছেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন শুরু করেন সহকারী শিক্ষকরা। তারা জানান, তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ব্যাহত হচ্ছে স্বীকার করলেও তারা নিরুপায় বলে জানান।
পাবনা পৌর সদরের শিবরামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারজানা ইয়াসমিন ও সাঈদ উল ইসলাম বলেন, সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়ে জটিলতার অবসান এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি— এই তিন দফা দাবিতে তাদের আন্দোলন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে কর্মবিরতি চলছে এবং দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক সমাজ পাবনার যুগ্ম আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন এবং পাবনা সদর উপজেলা শিক্ষা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি আরিছুর রহমান হীরা বলেন, "আমাদেরও কষ্ট হচ্ছে, কোমলমতি শিশুদের বার্ষিক পরীক্ষার সময় আন্দোলন করা। কিন্তু আমরা তো নিরুপায়। আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে এখন তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাই সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান দ্রুত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করে পরীক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দিবেন।"
এদিকে, বার্ষিক পরীক্ষার সামনে শিক্ষকদের এমন কর্মসূচী পালনে ক্ষুব্ধ অভিভাবক মহল। শিবরামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে কথা হয় দুজন অভিভাবক ফারজানা আক্তার ও শারমিন আক্তার তমার সঙ্গে। তারা বলেন, "বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হলেও সহকারী শিক্ষকদের এমন সময় আন্দোলন কাম্য নয়। ক্ষতি তো আমাদের সন্তানের হচ্ছে। ভালো পরীক্ষা দিতে না পারলে ভালো ফলাফল করে পরবর্তী ক্লাসে উঠবে কিভাবে। জটিলতা নিরসনের দাবি জানান তারা।"
সাধুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোজিনা খাতুন বলেন, "সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকলেও, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আসছে বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। তাই নিজেদের চেষ্টায় আমি আমার কৌশলে শিশুদের বার্ষিক পরীক্ষা নিচ্ছি। যদিও একার পক্ষে পরীক্ষা গ্রহণ করতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে, কষ্ট হচ্ছে।" সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকলেও প্রধান শিক্ষকদের সহায়তায় বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকালে পাবনা পৌর সদরের সাধুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে নিজেদের সন্তানকে নিয়ে স্কুলে এসেছেন অভিভাবকরা। শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে ক্ষুব্ধ তারা। সোমবার সকালে পাবনা পৌর সদরের শিবরামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর