বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াত ইসলামীর তিন নেতার ঘৃণাসূচক প্রতিকৃতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে আঁকা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নির্দেশনা সেই প্রতিকৃতি মুছে ফেলা হয়। হলটির হল সংসদের পক্ষ থেকে বলা হয়, পুনরায় এর প্রতিবাদে ফের আঁকা হবে এই প্রতিকৃতি। যদিও হল প্রশাসন বলছেন, যেহেতু অনুমতি মেলেনি; তাই তাদের আর অঙ্কন করতে দেওয়া হবে না।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে হল প্রশাসনের উদ্যোগে ওই প্রতিকৃতি মুছে ফেলা হয়। এর আগে শনিবার রাতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ হল সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত ‘চিত্র প্রদর্শনী ও তুলির আঁচড়ে দ্রোহ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে রাতে হলের সড়কের মেঝেতে এই ঘৃণাসূচক প্রতিকৃতিগুলো আঁকে শিক্ষার্থীরা। হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংক্রান্ত ছবি অঙ্কনের অনুমতি নেওয়া হলেও, এ সংক্রান্ত প্রতিকৃতি আঁকার অনুমতি নেওয়া হয়নি, বলে জানানো হয়েছে।
জগন্নাথ হল সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) পল্লব বর্মণ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল, তারা তাদের দ্রোহের জায়গা থেকে রাজাকারদের ছবি এঁকেছিল। এখন রাজাকারদের দাঁড়ি-টুপির কথা বলে এটাকে বিতর্কিত করা হচ্ছে, ডেফন্ড করা হচ্ছে। ইসলাম ধর্মের প্রতি সম্মান রেখে বলছে, এখানে দাঁড়ি-টুপি ব্যাপার না। তারা যেমন, তেমনই ছবি আঁকা হয়েছে। এখন দাঁড়ি-টুপি না থাকলেও তাদের ছবি আঁকা হতো, এখন আপনারা তো তাদের ছবি দাঁড়ি-টুপি ছাড়া ছবি দিতে পারবেন? পারবে না তো! আমরা সকালে হঠাৎ করে জানতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটি মুছে ফেলা হচ্ছে। জানি না, তাদের কি ভয়! কেন তারা এটি মুছে ফেলল? তারা যেটি সিদ্ধান্ত নিল, এমন স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আমরা রাজাকারদের ছবি আবার আঁকব। এর মধ্য দিয়ে আমরা আবারও বলতে, চাই জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থীরা রাজাকারদের বিপক্ষে সবসময় অবস্থান করবে।’
এদিকে জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল বলেন, ‘তারা যে এ ধরনের ছবি আঁকবে, এ সংক্রান্ত অনুমতি তারা নেয়নি। জানানো হয়েছিল, তারা মুক্তিযুদ্ধের ছবি প্রদর্শন করবে এবং শিল্পীরা এ সংক্রান্ত ছবি আঁকবে। কিন্তু পরে এ ধরনের ছবি আঁকলে, অনুমতি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় তা মুছে দেওয়া হয়।’
শিক্ষার্থীরা পুনরায় আঁকতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েেছ, নতুন করে অনুমতি চাইলে অনুমতি দেওয়া হবে কি-না এ প্রসঙ্গে হল প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘এ বিষয়ে আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হবে না। এখন তারা যদি করতে চায়, তারা তো স্বাধীন। হলের প্রাঙ্গণে আর ভেতরে এটি আর আমি একসেপ্ট করব না।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলে, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর