ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ছাত্রীদের হলে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ‘লুচ্চামি করতে পারবে’—এমন মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈবিছাআ) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব বাঁধন বিশ্বাস স্পর্শ। গত পরশু রাতে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে এ মন্তব্য করেন।
এদিকে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের ‘শুয়োরের বাচ্চার চেয়েও অধম’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ইবি শাখা ছাত্রদলের কর্মী রেজাউল ইসলাম রাকিব। বৃহস্পতিবার শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদের শিক্ষকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পোস্টে রেজাউল ইসলাম রাকিব বলেন, “অনিয়ম, দুর্নীতি, নিয়োগ–বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি, সাজিদ হত্যার বিচারে তালবাহানা এবং কথায় কথায় ধর্মের দোহাই—এগুলো শুয়োরের বাচ্চার থেকেও অধম। কারণ শুয়োর পায়খানা খায়, কিন্তু ধর্মের নাম নিয়ে খায় না।”
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম-সদস্যসচিব বাঁধন বিশ্বাস স্পর্শ তাঁর পোস্টে বলেন, “ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে চাইলে প্রশাসন বিভিন্ন নিয়মের কথা বলে। অন্যদিকে, মেয়েদের হলে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বিষয়টি হলো, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে সবার সামনে লুচ্চামি করতে পারে না, কিন্তু মেয়েদের হলে তা করতে পারে। এতে তাদের কাছে নিজেদের স্বার্থই প্রতিফলিত হয়, শিক্ষার্থীদের স্বার্থ নয়। আর আয়েশা সিদ্দিকা হলের আপুদের কাছে অনুরোধ—অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীদের কথাও ভাবুন। এমনটি যদি ছেলেদের হলে হতো, তাহলে এতক্ষণে তুলকালাম বেঁধে যেত।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁধন বিশ্বাস স্পর্শ বলেন, “ওই দিন প্রশাসন নানা অজুহাত দেখিয়ে রাত ৮টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। অথচ একই দিনে মেয়েদের হলে প্রশাসনের উপস্থিতিতে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলেছে। এই বৈষম্যের প্রতিবাদেই আমি পোস্টটি দিয়েছি। তবে আমার পোস্টে কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করা উচিত হয়নি। ভবিষ্যতে সতর্ক থাকব।”
এ বিষয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক এস এম সুইট বলেন, “প্রশাসনের সমালোচনা যে কেউ করতে পারে, তবে তা শালীন ভাষায় হওয়া উচিত। এভাবে স্ল্যাং ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ছাত্রদল কর্মী রেজাউল ইসলাম রাকিব তার পোস্টের বিষয়ে বলেন, “সাজিদ আবদুল্লাহর খুনের সঙ্গে জড়িতরা শুয়োরের বাচ্চা ও শুয়োরের চেয়েও অধম—এটাই আমি পোস্টে বোঝাতে চেয়েছি। কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে থেকে যারা সাজিদের হত্যার বিচার করতে অবহেলা করছে এবং দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে তারাও শুয়োরের চেয়ে অধম। সেটা রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পর্যন্ত।”
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর