ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন ছাত্র ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র-জনতা বিক্ষোভে নেমে আসে। টিএসসি, রাজু ভাস্কর্য ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে একাধিক মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা হাদির হত্যার বিচার, খুনিদের গ্রেপ্তার এবং রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে স্লোগান দেন। ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের বলেন, রাষ্ট্রের জানার পরও হাদিকে রক্ষা করা হয়নি, যা চরম ব্যর্থতার প্রমাণ। রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদল। তারা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।
রাতের দিকে শাহবাগে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া বিক্ষোভে যোগ দেন। তারা হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে খুনিদের গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, হাদীকে যারা হত্যা করেছে তাদের অবিলম্বে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। যদি না করা হয়, তবে কোনোভাবেই লড়াই থামাবে না স্বাধীনতাকামী জনগণ। আমাদের লড়াই আরও কঠোর থেকে কঠোরতর হবে।
তিনি আরও বলেন, শরীফ ওসমান হাদিকে হত্যার মাধ্যমে জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে নিষিদ্ধ ও পলাতক আওয়ামী লীগ এবং তাদের মিত্ররা। তারা ভুলে গেছে যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এ দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে রাজপথ রাঙিয়েছে, কিন্তু হার মানেনি। তাদের আবার মনে করিয়ে দিতে হবে, রক্ত ঝরলে এ দেশের জনগণের সঙ্গে কেউ টিকতে পারবে না।
সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা একটা কঠিন সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। একজন শরীফ ওসমানকে হত্যাকে করে আপনারা নির্বাচন ভণ্ডুল করবেন সেটি হবে না। এই দেশে খুনী হাসিনাসহ সকল দোসরদের বিচার হবে। এটা কোন ফাঁকা বুলি না। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশ বসে যারা ষড়যন্ত্র করছেন তাদের সেই স্বপ্ন কোনভাবেই বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না। আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার, যেহেতু নির্বাচন হবে; তাই গণতান্ত্রিক দলগুলো উচিত হবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ও হটকারি সিদ্ধান্ত না নেওয়া। আমরা চাই না, হাদির মতো আর কেউ লক্ষ্য বস্তু হোক। আমরা ওসমান হাদির খুনিদের ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলতে থাকবে। হাদির স্মৃতি রক্ষার্থে আর ভেদাভেদর সুযোগ নাই, আমরা হাদির গঠনমূলক ও স্বপ্নের রাজনীতির দিকে এগোবো।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর