
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় পুকুর খননকারীর কাছে চাঁদা চাইতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার যুবদল ও কৃষক দলের ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নইপাড়া গ্রামের মৃত বানু শেখের ছেলে সায়েদ আলী বাদী হয়ে শনিবার (১৭ মে) সকালে ৮ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করেছেন।
এর আগে শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে উপজেলার ধুবিল ইউনিয়নের নইপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় অভিযুক্তদের ৩/৪টি মটরসাইকেল ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। এ সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাতে বেশকিছু বিক্ষুব্ধ নারী-পুরুষদের ওই সব নেতাকর্মীদের আটকে রেখে মারধর করতে দেখা গেছে। সংবাদ পেয়ে রাত ১০টার দিকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সলঙ্গা থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মোমিন (৪০), সদস্য রোকনুজ্জামান খোকন (৪৫) ও সলঙ্গা থানা কৃষক দলের সদস্য সচিব আব্দুস সোবহান (৪৭), তাদের সহযোগী দলীয় কর্মী সলঙ্গার চৌধুরী ঘুঘাট গ্রামের আশরাফ আলী (৩০) ও মালতিনগর গ্রামের মামুন সরকার (৪০) ।
বাদী সায়েদ আলী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, নইপাড়া মৌজায় ১৩ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করার সময় মাস খানেক আগে প্রশাসন তা বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে সেখানে থাকা ভেকু মেশিন দিয়ে স্থানীয় হোসেন আলীর বাড়িতে মাটি ভরাটের কাছ চলছিল। এ অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে মামলায় উল্লিখিত ব্যক্তিরা বাদীর কাছে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিল। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে যুবদল ও কৃষক দলের নেতাকর্মীরা মটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। ওই সময় তারা বলেন এখানে ব্যবসা করতে চাইলে আমাদের দেড় লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা বাদীকে গালমন্দ করতে করায় তার বড় ভাই আব্দুল মোন্নাফ প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা বাদী ও তার ভাইকে মারধর করেন এবং ভেকু মেশিন ভাংচুর করেন। ওই সময় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৫জনকে আটকে রেখে মারধর করেন এবং তাদের ৩/৪টি মটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। বাকিরা পালিয়ে যায়। এরপর সংবাদ পেয়ে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে আটক ৫জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সলঙ্গা থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, সংবাদ পেয়ে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ৫ নেতাকমীকে আটক করে থানায় আনা হয়। এরপর রাতেই তাদের সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সায়েদ আলী বাদী হয়ে ৮জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। শনিবার দুপুরে আটকদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সলঙ্গা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম সরকার বলেন, ধানের জমিতে পুকুর খনন সরকারিভাবে অবৈধ। এছাড়াও ওই এলাকায় পুকুর খননের মাটি পরিবহনের কারণে রাস্তাঘাট নষ্ট হচ্ছে। যে কারণে দলের নেতাকর্মীরা জনস্বার্থে পুকুর খনন বন্ধ করতে সেখানে গিয়েছিল, চাঁদাবাজি করতে যায়নি।
আরমান/সাএ
সর্বশেষ খবর