
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিতরণে ওজনে কম দেওয়া, কার্ডধারীদের কাছ থেকে টাকা আদায় এবং কার্ড জিম্মি রাখার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও খাদ্য দপ্তর থেকে সরবরাহ করা চালে শেখ হাসিনার লোগোযুক্ত বস্তা ব্যবহারের বিষয়টির ব্যাপারেও স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন।
বাকশীমূল ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিনে গিয়ে একাধিক কার্ডধারীর সঙ্গে কথা বলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। তারা জানান, সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম চলে। এই কর্মসূচিতে চাল, ডাল, তেল ও চিনি বিক্রি করা হয়।
ক্রেতারা জানান, ৫৪০ টাকার বিনিময়ে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ২ লিটার তেল এবং ১ কেজি চিনি দেওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেককে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। ফলে ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হট্টগোল হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৮ নম্বর ওয়ার্ডের এক নারী জানান, ইউপি মহিলা সদস্যের কাছে কার্ডের জন্য ৫০০ টাকা দেওয়ার পরও তার কার্ড আটকে রাখা হয়েছে। একই ধরনের অভিযোগ করেছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের এক হিন্দু নারীসহ আরও কয়েকজন।
স্থানীয়রা জানান, পণ্য বিতরণে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
বাকশীমূল ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মারজানা আক্তার জানান, ইউনিয়নে মোট ৯৩৫ জন কার্ডধারী থাকলেও এ পর্যন্ত ৭৫৪ জন স্মার্ট কার্ড পেয়েছেন এবং তারাই পণ্য নিচ্ছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. লিটন রেজা জানান, ৫৪০ টাকা মূল্যে ৭৯৮ জনের মধ্যে পণ্য বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার যদি প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিলার নিয়োগ দিত, তাহলে লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষের এত ভোগান্তি হতো না।
টিসিবির বাকশীমূল ইউনিয়নের ডিলার ও সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা জানান, স্মার্ট কার্ডধারীদের কাছে অ্যাপের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ করায় কিছুটা দেরি হচ্ছে। ওজনে কম দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, খাদ্য দপ্তর থেকে আসা বস্তায় চাল কম থাকায় সমানভাবে ভাগ করতে গিয়ে কিছুটা ঘাটতি হচ্ছে।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন জানান, ওজনে কম দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে অথবা কোনো ইউপি সদস্য টাকা নিয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেখ হাসিনা লোগোযুক্ত চালের বস্তার বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি খাদ্য দপ্তর ভালোভাবে ব্যাখ্যা দিতে পারবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর