
গৌরীপুরে বন বিভাগের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন গৌরীপুর-শ্যামগঞ্জ সড়কের গাছ কাটার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৫ জুন) গাছগুলো কাটা হয় এবং সন্ধ্যায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা সরকার প্রমা গাছগুলো জব্দ করেন।
এ বিষয়ে সুনন্দা সরকার প্রমা বলেন, "রাস্তার কাটা গাছ জব্দ করা হয়েছে। এর সাথে কারা জড়িত রয়েছে, তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর গৌরীপুর উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. সাখাওয়াত হোসেন তসলিম জানান, গাছ কাটার সময় তারা বাধা দেন এবং উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেন। পরবর্তীতে জানতে পারেন, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি ও গৌরীপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. শহিদুল্লাহ গাছগুলো বিক্রি করছিলেন।
এদিকে, সরকারি রাস্তার গাছ কাটার অভিযোগে সুজন-এর আহ্বায়ক রিয়াজুল হাসনাত ও যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন তসলিম উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গাছ কাটার কাজে নিযুক্ত শ্রমিক আব্দুল হামিদ, রানা ও মুরাদ হোসেন জানান, বন প্রহরী মেহেদি হাসান তাদের গাছ কাটার নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মেহেদি হাসানের বিরুদ্ধে গৌরীপুর-কলতাপাড়া সড়ক, শাহগঞ্জ সড়ক, শ্যামগঞ্জ সড়ক ও বন বিভাগের আশপাশের শতাধিক গাছ কাটার অভিযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম জানান, ঘটনাটি তিনি এই প্রথম শুনেছেন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বন বিভাগের সহকারী বন কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম খান জানান, মেহেদী হাসান রনি নামের এক বন প্রহরী গাছ বিক্রির সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি তারা জেনেছেন এবং তার বিরুদ্ধে বন আইন ১৯২৭ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গৌরীপুর এসএফএনটিসির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান জানান, বন প্রহরী মেহেদী হাসান রনি অবৈধভাবে ৩টি গাছ কেটে সাড়ে ১৬ হাজার টাকায় বিক্রির সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
দৌলতপুর গ্রামের আব্দুল আলীর পুত্র লাল মিয়া বেপারী জানান, বন বিভাগের লোক তাকে ফোন করে গাভীশিমুল নিয়ে যায়। সেখানে ২নং গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. শহিদুল্লাহ'র উপস্থিতিতে গাছের দাম নির্ধারণ করা হয়। তিনি প্রথমে ১৫ হাজার টাকা মেম্বারের কাছে দেন এবং মেম্বার সেই টাকা বন প্রহরী মেহেদী হাসান রনিকে দেন। পরে আরও ১৫০০ টাকা মেহেদীকে দিয়েছেন।
উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তা মেহেদী হাসান রনি তার সামনে লাল মিয়া বেপারীর সাথে গাছের দাম করেন। তিনি বলেন, ঝড়ে পড়া গাছ কাটার অনুমতি আছে। গাছের দাম ১৬ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারিত হয়। বেপারী তাকে ১৫ হাজার টাকা দেন এবং তিনি সেই টাকা বন কর্মকর্তাকে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, অভিযুক্ত বন প্রহরী মেহেদী হাসান রনিকে ফোন করা হলে তিনি অফিসে আসতে বলেন। তবে সাংবাদিকরা সেখানে পৌঁছানোর পর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর