
ফরিদপুরের সালথায় গত এক সপ্তাহে একের পর এক গরু চুরির ঘটনায় স্থানীয় খামারি ও কৃষকরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের চন্ডীবরদী, চরবল্লভদী ও খালিশা বল্লভদী গ্রামে এসব চুরির ঘটনা ঘটছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, সংঘবদ্ধ চোরের দল রাতের আঁধারে খামারি ও কৃষকদের গোয়ালঘর থেকে অন্তত ৯টি গরু চুরি করে নিয়ে গেছে। বল্লভদী ইউনিয়নের পাশ দিয়ে যাওয়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ব্যবহার করে চোরেরা ট্রাক ও পিকআপে করে চুরি করা গরুগুলো সহজেই অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। এতে স্থানীয় কৃষক ও খামারিরা সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছেন।
একের পর এক গরু চুরির ঘটনায় পুরো ইউনিয়নবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে রাত জেগে গোয়ালঘর পাহারা দিচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এভাবে গরু চুরি হতে থাকলে এলাকার মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাবে। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ এবং পুলিশের টহল বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহে শুধু চন্ডীবরদী গ্রাম থেকেই অন্তত ৬টি গরু চুরি হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) গভীর রাতে চন্ডীবরদী গ্রামের কৃষক সেলিম শেখের গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হয়। সেলিম শেখ জানান, সারাজীবনের জমানো টাকায় কেনা গরুগুলো চুরি হয়ে যাওয়ায় তিনি পথে বসে গেছেন।
এর আগে ২ জুলাই গভীর রাতে চন্ডীবরদী গ্রামের গ্রাম পুলিশ মিলন মিয়ার গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হয়। মিলন মিয়া জানান, গরুগুলো হারিয়ে তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন।
এছাড়াও সম্প্রতি চন্ডীবরদী গ্রামের শাজাহান সরদারের তিনটি গরু, পিলি মুন্সির একটি গাভী এবং চরবল্লভদী গ্রামের হাসেম মোল্যার দুটি গরু ও খালিশা বল্লভদী গ্রামের কোবাদ মোল্যার দুটি গরু চুরি হয়েছে। কোবাদ মোল্যা জানান, গরু চুরি হওয়ার পর তিনি গরু পালন বাদ দিয়েছেন।
চন্ডীবরদী গ্রামের বাসিন্দা শাজাহান শরিফ জানান, তাদের এলাকা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে হওয়ায় চোরেরা দ্রুত পালিয়ে যেতে পারে। তারা সংঘবদ্ধ চোর চক্র। এদের হাত থেকে সম্পদ রক্ষা করা জরুরি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মহিনুর শিকদার চুরি প্রতিরোধে চন্ডীবরদী স্ট্যান্ড, চরবল্লভদী মোড় ও বাউশখালীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে কঠোর পাহারার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন। একইসাথে মহাসড়কে ওঠার প্রধান পথ চন্ডীবরদী স্টান্ডে একটি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কথাও বলেছেন তিনি।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান জানান, তারা গরু চুরির একাধিক অভিযোগ পেয়েছেন এবং পুলিশি টহল বৃদ্ধি করেছেন। এলাকাটি মুকসুদপুর সীমান্ত এলাকায় হওয়ায় হাইওয়ে পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর