
গাজীপুরের শ্রীপুরে এক স্কুলছাত্রকে (১৩) স্কুলের সামনে থেকে পিস্তল ঠেকিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে দেড় ঘণ্টা পর ওই শিক্ষার্থীকে ফেরত দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কাওসার আহমেদকে (২৮) আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের হাজী প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী স্কুলছাত্র ফেরদৌস উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। সে হাজী প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত কাওসার আহমেদ একই ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের ইমান আলীর ছেলে। কাওসারের ভাগিনা ওবায়দুল একই স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ফেরদৌস এবং ওবায়দুল স্কুলের এক শিক্ষার্থীর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ওবায়দুল তার মামাতো ভাই আরাফাতকে বিষয়টি জানায়। পরে তারা দুইজন ফেরদৌসকে জিজ্ঞাসা করার জন্য স্কুলের সামনে গিয়ে অপেক্ষা করে। স্কুল ছুটির পর এ বিষয় নিয়ে ফেরদৌসের সাথে ওবায়দুল এবং আরাফাতের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আরাফাত তার বাবা এমদাদুল হককে খবর দিলে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। পরে কাওসার আহমেদও সেখানে এসে ফেরদৌসকে মারধর করে ধরে নিয়ে যায়। এসময় স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে চাইলে কাওসার পিস্তল বের করে তাদেরকে গুলি করার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ২২ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্কুল ড্রেস পরিহিত এক শিক্ষার্থীকে কয়েকজন যুবক মারতে মারতে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এসময় শিক্ষক রুবেলসহ শিক্ষার্থীরা তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে টি-শার্ট পরিহিত কাওসার আহমেদ পিস্তল দিয়ে শিক্ষক রুবেল হোসেনের দিকে তাক করে ভয় দেখান।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফেরদৌস জানায়, স্কুল থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই চারজন ছেলে তাকে স্কুলের পাশে টেনে নিয়ে মারধর শুরু করে। পরে তারা তাকে তাদের বাসার সামনে নিয়ে যায় এবং সেখানেও মারধর করে।
হাজী প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নূরুন্নাহার জানান, স্কুল ছুটির পর বাচ্চারা যাওয়ার পথে বাহিরে ঝগড়া লেগেছিল। এসময় তাদের অভিভাবকরা এসে হুমকি-ধমকি দেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে থেকে একজন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার স্কুলের শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, মঙ্গলবার রাত ১০টায় কাওসার আহমেদকে শ্রীপুর পৌর এলাকার গড়গড়িয়া মাষ্টারবাড়ী থেকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে, অনলাইনে পিস্তল কিনেছিল ভয় দেখানোর জন্য।
ওসি আরও জানান, মূলত আরাফাতের সাথে ভুক্তভোগীর তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে আরাফাত তার বাবা এমদাদকে খবর দিলে তিনি ঘটনাস্থলে যান। এমদাদের ভাতিজা কাওসারকে খবর দিলে সে খেলনা পিস্তল নিয়ে আসে এবং ভুক্তভোগীকে টেনে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। কাওসারের বাড়ী তল্লাশী করে দুইটি ওয়াকিটকি, একটি চার্জার এবং খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে কাউসারকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর