• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৮ সেকেন্ড পূর্বে
রাশেদুল ইসলাম রাশেদ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:১৭ দুপুর

আবরার ফাহাদের আত্মা আজও কেন ন্যায়বিচারের অপেক্ষায়?

ফাইল ফটো

ছয় বছর হয়ে গেল। সময় বয়ে গেছে নদীর স্রোতের মতো, কিন্তু থেমে আছে এক পরিবার, থেমে আছে এক মায়ের চোখের পানি, আর থেমে আছে এই দেশের ন্যায়বিচারের গতি।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিনগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশলের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে।

একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস—দেশের প্রতি ভালোবাসা, অন্যায়ের প্রতিবাদ। আর সেই কারণেই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী তাকে ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় ২০১১ নম্বর কক্ষে। ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে নির্মম নির্যাতনের পর রাত তিনটার দিকে তার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকে হলের সিঁড়িতে।

একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসের দাম কি একজনের জীবন?

আবরার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রশ্ন তুলেছিলেন ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি নিয়ে, দেশের স্বার্থ রক্ষার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেই একটি পোস্টই যেন হয়ে উঠেছিল তার মৃত্যুর পরোয়ানা। সেদিন যারা তাকে পিটিয়েছিল—তারা সবাই ছিল একই বিশ্ববিদ্যালয়ের, একই বয়সী, কারও বন্ধু, কারও সহপাঠী। কিন্তু রাজনীতি, অন্ধ আনুগত্য আর ক্ষমতার নেশায় তারা ভুলে গিয়েছিল—আবরারও একজন মানুষ, একজন স্বপ্নবাজ তরুণ, যে একদিন দেশের গর্ব হতে পারত।

বিচার হলো, কিন্তু ন্যায় কি প্রতিষ্ঠিত হলো?

আবরারের বাবা মামলা করেছিলেন ২৫ জনের বিরুদ্ধে। বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিল—২০ জনের মৃত্যুদণ্ড, বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। হাইকোর্টও রায় বহাল রেখেছে। কিন্তু ছয় বছর পরও মামলাটি এখনো আপিল বিভাগে ঝুলে আছে। আবরারের পরিবার প্রতিদিন আদালতের আশায় তাকিয়ে থাকে, কিন্তু শুনানি পিছিয়ে যায়, তারিখ বদলায়, কাগজ ঘোরে—বিচার নয়, কেবল প্রতিশ্রুতির কাগজে কালি লাগে। তাদের প্রশ্ন—বিচারের ঘড়িতে কেন থেমে আছে সময়?

ন্যায়বিচার বিলম্বিত মানে কি ন্যায়বিচার অস্বীকার?

আবরারের মা আজও বলেন—“আমার ছেলেকে যে রকম করে মারা হয়েছে, তেমনি করে তাদেরও বিচার হোক।” কিন্তু যত বিলম্ব হচ্ছে, ততই শঙ্কা বাড়ছে—এই বিচার কি রাজনৈতিক ফাইলের ভারে চাপা পড়ে যাবে? সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন চাঞ্চল্যকর মামলায় বিলম্ব মানে অপরাধীদের সুযোগ দেওয়া, আর সেটাই ভয়। ন্যায়বিচার যত দেরিতে হয়, ততই ভয়ের ছায়া দীর্ঘ হয়, ততই শিকড় গেড়ে বসে অন্যায়।

আবরারের রক্তে লেখা প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?

বুয়েটের শেরেবাংলা হলের করিডোরে আজও একটি ফলক দাঁড়িয়ে আছে—আবরারের নাম লেখা। কিন্তু সেই ফলকের নিচে জমে থাকা নীরবতার চেয়ে করুণ কিছু নেই। প্রতিটি নতুন শিক্ষার্থী সেখানে দাঁড়িয়ে ভাবে—এখানে একসময় এক তরুণ প্রাণ স্বপ্ন দেখেছিল, এই দেশটাকে বদলাতে চেয়েছিল। তার সেই স্বপ্ন কি আজও বেঁচে আছে, নাকি রাজনীতির রক্তমাখা করিডোরে হারিয়ে গেছে?

আর কত বছর লাগবে আবরারের আত্মাকে শান্তি দিতে?

ছয় বছর পেরিয়ে গেছে, তবু শান্তি আসেনি। আবরারের মা এখনও দরজার দিকে তাকিয়ে থাকেন, যেন ছেলে ফিরে আসবে। বাবা এখনো ফাইল হাতে ঘুমান—মনে করেন, “হয়তো কাল খবর আসবে, বিচার শেষ হয়েছে।” কিন্তু সেই দিন আসে না। সমাজ এগোয়, সরকার বদলায়, তবু আবরারের রক্তের প্রশ্নটি ঝুলে থাকে বাতাসে—“আমার অপরাধ কী ছিল?” যেদিন এই প্রশ্নের উত্তর শুধু আদালতে নয়, আমাদের বিবেকেও প্রতিধ্বনিত হবে— সেদিনই হয়তো আবরারের আত্মা সত্যিকারের শান্তি পাবে।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]