
নিজেকেই একজন প্রতিবাদী দুদক মনে করবেন। অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে অডিও ভিডিও করে আমাদের কাছে পাঠাবেন। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন দুদক কমিশনার(অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অব) হাফিজ আহসান ফরিদ।
তিনি সোমবার (১৯ মে) সকাল ৯টায় সুনামগঞ্জ আসুন দুর্নীতির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হই এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জে দুর্নীতি দমন কমিশনের(দুদক)গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথা গুলো বলেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন,বেশির ভাগই যাদেরকে সরকার আমানতদারি ও বিশ্বস্ত মনে করে চেয়ারে বসায় তারাই দুর্নীতি লুটপাট করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির হাছন রাজা মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় দুদক এর আয়োজিত গণশুনানিতে শত শত নাগরিকগনের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অব)হাফিজ আহসান ফরিদ এসময় সকলের উদ্দেশ্য বলেন,মানুষ এখন দুর্নীতির বিষয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। বিভিন্ন অফিস আদালতে মানুষ এখন মন খুলে কথা বলতে পারছে।
আর ৫ই আগস্টের পরে দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। যার কারণে প্রতিটি জেলা উপজেলা ও বিভাগীয় শহরের বিভিন্ন দপ্তরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,সুশাসনের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। দুর্নীতি প্রতিরোধে জনগণের সাহসী ভূমিকা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। প্রতিবাদ করতে লাগে সৎসাহস। নিজের অবস্থানে থেকে সাহসী ভূমিকা রাখবেন, তাহলেই আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে পারব।
অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মো ইলিয়াস মিয়া এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহাপরিচালক(প্রতিরোধ) মো আক্তার হোসেন। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গণশুনানিতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নাগরিকরা তাদের দুর্ভোগ ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। বিশেষ করে পাসপোর্ট অফিস, ভূমি অফিস, বিদ্যুৎ বিভাগ, শিক্ষা অফিস, স্বাস্থ্য বিভাগ, পৌরসভা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআরটিএ, কৃষি অফিস, সমাজসেবা, ট্র্যাফিক বিভাগসহ প্রায় ২৫টি সেবাদানকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৫০টি নানা ধরনের হয়রানি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠে আসে।
অনেকে জানান,ঘুষ না দিলে নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট মেলে না,নামজারি বা খতিয়ান পেতে হয় দালালের দ্বারস্থ হতে। কেউ কেউ বলেন, হাসপাতালে বিনামূল্যে ওষুধ মেলে না,বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে হয় অবৈধ খরচ করতে। এসব অভিযোগ শুনে দুদক কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিদের তাৎক্ষণিক জবাবদিহির আওতায় আনেন। প্রাপ্ত অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
গণশুনানিতে প্রাপ্ত বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। কিছু ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সমাধানও হয়েছে। এছাড়া যে-সব অভিযোগ গভীর তদন্তের দাবি রাখে, সেগুলো নথিভুক্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর