
সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রনি দাবি করেন, গত এক বছরে বাংলাদেশে যত নাটকীয় পরিবর্তন হয়েছে, গত ১০০ বছরেও এত অল্প সময়ে এমন পরিবর্তন হয়নি। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এই গত এক বছরে পতনের অতল গহ্বরে পৌঁছে গেছি।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন তিনি।
গোলাম মাওলা রনি মন্তব্য করেছেন যে- দেশে বর্তমানে ‘নিত্য নতুন নাটক’ চলছে এবং এসব বিতর্ক জনগণকে ঠকানোর জন্য করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পদ্ধতি পরিবর্তন, গণভোটের সম্ভাবনা এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠন নিয়ে চলা আলোচনাকে তিনি ‘অপ্রয়োজনীয়’ এবং দেশের জন্য ক্ষতিকর বলে অভিহিত করেছেন।
রনি প্রশ্ন তোলেন, আগামীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন গতানুগতিক পদ্ধতিতে হবে, নাকি পিআর পদ্ধতিতে হবে, কিংবা নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট অনুষ্ঠিত হবে কি না—এসব বিষয় নিয়ে চলা তর্ক-বিতর্ক দেশের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না।
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে রনি বলেন, নেপাল বা ইসরায়েলের মতো যেসব দেশে এই পদ্ধতি চালু হয়েছে, সেখানে এটি ভালো ফল আনতে পারেনি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশে এই পদ্ধতির ভূত চেপে বসেছে। এছাড়াও তিনি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ (উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ) গঠনের প্রস্তাবের সমালোচনা করেন। তিনি নিম্নকক্ষে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা (পিআর পদ্ধতিতে) থাকলেও, উচ্চকক্ষ বা লর্ডসভায় ‘রায়বাহাদুর, খান বাহাদুর লর্ড’ শ্রেণির মানুষ স্থান পাবে বলে মনে করেন।
রনির মতে, ভারতের বা ইংল্যান্ডের মতো রাজকীয় ব্যাপার বাংলাদেশে নেই, তাই এই ধরনের ব্যবস্থা অপ্রয়োজনীয়।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রনি দাবি করেন, গত এক বছরে বাংলাদেশে যত নাটকীয় পরিবর্তন হয়েছে, গত ১০০ বছরেও এত অল্প সময়ে এমন পরিবর্তন হয়নি।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এই গত এক বছরে পতনের অতল গহ্বরে পৌঁছে গেছি। তিনি দৃঢ়ভাবে মত দেন যে এসব বিতর্ক ও প্রশ্নগুলো মূলত ‘জনগণকে ঠকানোর জন্য, প্রতারণা করার জন্য এবং নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য’ উত্থাপন করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে চলমান বিভিন্ন কার্যক্রমের সমালোচনা করে রনি বলেন, এই সময়ে যে কাজগুলো করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং এর পেছনে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে, তার দুই পয়সার মূল্য হবে না।
তিনি প্রধান উপদেষ্টার ঘন ঘন বিদেশ সফর এবং বিভিন্ন ‘ঐকমত্য কমিশনের’ বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তার ভাষ্যমতে, ফাইভ স্টার হোটেলে এসির মধ্যে বসে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যে সকল ‘খাজুরে আলাপ গালগল্প’ করা হচ্ছে, আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা এর একটিও বাস্তবায়ন করবে না।
গোলাম মাওলা রনি উল্লেখ করেন, এসব অপ্রয়োজনীয় আলোচনার কারণে দেশের বহু রাস্তাঘাট খানাখন্দকে ভরে গেছে এবং বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। নির্বাচন কবে হবে (ফেব্রুয়ারি নাকি এপ্রিলে) এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস কতদিন ক্ষমতায় থাকবেন—এসব বিষয়কে বিতর্কের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
খোলা কলাম এর সর্বশেষ খবর